চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চকরিয়া, রওশনহাটসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।
রোববার (৩০ নভেম্বর) লোহাগাড়া উপজেলার বটতলি মটর স্টেশনের পুলিশ বক্সের সামনে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেন বাস্তবায়ন কমিটির একাংশ। পরে স্থানীয় জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর অনুরোধে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।
অবরোধকারীরা জানান, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কটি এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে। সংবাদপত্র খুললেই দুর্ঘটনার খবর। বারবার দাবি জানালেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। তাই মৃত্যুবরণকারীদের স্মরণে এ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি।’
অবরোধকারীরা আরো ঘোষণা দেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ছয় লেনের দাবিতে অগ্রগতি না হলে সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে সাথে নিয়ে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
মরণফাঁদ মহাসড়ক হিসেবে বহুদিন ধরে চিহ্নিত এই সড়কটিতে প্রতিদিনের দুর্ঘটনা, স্থায়ী যানজট এবং জনদুর্ভোগ চরমে ওঠায় সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবাই এবার এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের ভয়াবহ যানজট, দুর্ঘটনা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত সংকটের চিত্র তুলে ধরে দ্রুততম সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
সকল ৯টা থেকে লোহাগাড়ার বিভিন্ন অংশে যান চলাচল পুরাপুরি বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা, যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে দূরপাল্লার বাসসহ গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যাই, যাত্রীরা ছিল চরম ভোগান্তিতে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, ‘এই মহাসড়কটি মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’
৬ লেইন বাস্তবায়ন কমিটির সংগঠক আজাদ শেখ বলেন, ‘আজকের এই ব্লকেড কর্মসূচি প্রমাণ করে লোহাগাড়ার জনগণ ৬ লেইন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না।’
বাস্তবায়ন কমিটির আরেক সংগঠক তামিম মির্জা বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বার বার জানানোর পরও দৃশ্যমান কাজ হয়নি তাই আজকের এই ব্লকেড কর্মসূচি।’
তিনি আরো জানান- উপদেষ্টা, শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রামের ডিসি সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাথে কথা বলেছি, উনারা আগামী ৭ দিনের মাধ্যে মহাসড়ক ৬ লেইন করার কাজ শুরু করবে। এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যহারের ঘোষণা দেন বলেও জানান তিনি। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম আন্দোলনকারিদের উদ্দেশ্যে বললেন, আপনারা জনদূর্ভোগ কমাতে ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনিন আমি এই মহাসড়কের সম্পর্কে মন্রণালায়কে অবহিত করব।
এর আগে, সংগঠনটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে ফেসবুক প্রোফাইল পরিবর্তন, লিফলেট বিতরণ, গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ব্যানার টাঙানো, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্মারকলিপি প্রদান, সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।



