নারায়ণগঞ্জে নাগরিক দুর্ভোগসহ পাঁচ দফা দাবিতে নগরভবন ঘেরাও ও সিটি করপোরেশনে স্মারকলিপি প্রদান করেছে স্থানীয় সংগঠন ‘ওয়ার্কিং ফর বেটার নারায়ণগঞ্জ’।
আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জনভোগান্তি-বিহীন পরিকল্পিত উন্নয়ন, নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল বাস্তবায়ন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, দুর্গন্ধমুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত পানি কর প্রত্যাহার এবং গলাচিপা, জামতলা, মাসদাইর ও গুদারাঘাট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি তুলে ধরেন।
সংগঠনের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘আমরা পাঁচ দফা দাবিতে নগরভবন ঘেরাও করেছি। বর্তমান প্রশাসক গতিশীল হলেও আমরা চাই সব বিভাগে সমান গতিশীলতা থাকুক। সিটি করপোরেশন যেন অতীতের মতো মানুষের পাশে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারদের ধীরগতির কারণে ড্রেন সংস্কারের দুই মাসের কাজ ছয় মাসেও শেষ হচ্ছে না। ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না। উন্নয়নকালে কিছুটা ভোগান্তি স্বাভাবিক, তবে তা মাসের পর মাস চলতে পারে না।’
নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি এক রাস্তার শহর। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ভার্টিকাল ব্যবস্থা নিতে হবে। মেট্রোরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড রেলের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।’
ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আধুনিক গবেষণা প্রয়োজন। মশার উপস্থিতি কমলেও ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এটি নতুন কোনো ভাইরাস কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।’
পানির মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমরা টাকা দিয়ে ময়লা পানি খাচ্ছি। এই পানি দিয়ে হাত-পা ধোয়া যায় না। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না হওয়া পর্যন্ত পানির বিল বন্ধ রাখা উচিত।’
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে বৃষ্টির পানি বিসিক খাল ও কল্যাণী খাল দিয়ে বের হয়ে যেত। এখন খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। শীতলক্ষ্যায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একটি বাসযোগ্য নগরী চাই। আমার সন্তান যেন আমাকে দোষারোপ না করে যে আমি নগর উন্নয়নে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ১৫ দিনের সময় দিচ্ছি। এরপর প্রয়োজনে আমরণ অনশন করব।’
মানববন্ধন শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আবু নছর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপি গ্রহণের সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।