ফেনীর সোনাগাজীতে অষ্টম উপজেলা স্কাউট সমাবেশের মহা তাঁবু জলসা সমাপনী অনুষ্ঠানে গানের তালে ‘জয় বাংলা’ গান বাজানোতে তাৎক্ষণিক অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। এ সময় জেলা এডিএম মনজুর আহসানকে দায়িত্ব দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চরমজলিশপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত স্কাউট জাম্বুরি অনুষ্ঠানে রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে ফেনী জেলায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্টের পরও পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুগতরা বিভিন্নভাবে প্রতিটি কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অনুষ্ঠানের মূল অংশ শুরু হয় সন্ধ্যার পর প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের উপস্থিতেতে। শুরুতে ওই স্কুলের ছাত্রীরা ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ নৃত্যর তালে গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করলে উপস্থিত অনুষ্ঠানে আগত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও দর্শকরা এ গান শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গানের প্রথম কলি শুনেই জেলা প্রশাসক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আয়োজকদের ভর্ৎসনা করেন। তিনিসহ সকল অতিথি ওই সময় অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক উপস্থিত জেলা এডিএমকে ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
বিশেষ অতিথি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আব্দীন বাবলু বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে সমাপনী অনুষ্ঠানে স্কুলের মেয়েদের গানে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গান বাজায় প্রধান অতিথিসহ আমরা অস্বস্তিতে পড়ে যাই, তখন জেলা প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা এডিএমকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিলে আমরাসহ অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক ও জেলা স্কাউটের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন এডিএম ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনজুর আহসান, সোনাগাজীর সহকারী কমিশনার ভূমি তানিয়া আক্তার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আব্দীন বাবলু, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের সভাপতি শিল্পপতি নাজমুল করিম দুলাল, ঢাকার শিল্পপতি মোরশেদ আলম সেলিম, জেলা ও উপজেলা স্কাউটের কর্মকর্তা, শিক্ষক, ও স্কাউটের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা এ ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছি। যা উপস্থিত সবাইকে বিব্রত করেছে। আগামীতে এ ধরনের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আরো সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।’
উল্লেখ্য, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হোসেন মোহাম্মদ আলমগীর ৪ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আন্দোলনে হামলার মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: ইব্রাহিম চরমজলিশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করায় এ নিয়ে ফেনীতে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।