চকরিয়া ও লামায় ইটভাটা ধ্বংসের প্রতিবাদে রাস্তায় ব্যারিকেট, গাড়ি ভাঙচুর

চকরিয়া ও লামায় ইটভাটা ধ্বংসের প্রতিবাদে প্রশাসন ও শ্রমিক মুখোমুখি অবস্থানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এ সময় শ্রমিকরা বাদশার টেক নামক স্থানে সড়কের ব্যারিকেট দিয়ে অবরোধ করে।

রফিক আহমদ, চকরিয়া (কক্সবাজার)

Location :

Chakaria
চকরিয়া ও লামায় ইটভাটা ধ্বংসের প্রতিবাদে রাস্তায় ব্যারিকেট, গাড়ি ভাঙচুর
চকরিয়া ও লামায় ইটভাটা ধ্বংসের প্রতিবাদে রাস্তায় ব্যারিকেট, গাড়ি ভাঙচুর |নয়া দিগন্ত

চকরিয়া ও লামায় ইটভাটা ধ্বংসের প্রতিবাদে প্রশাসন ও শ্রমিক মুখোমুখি অবস্থানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এ সময় শ্রমিকরা চকরিয়া-মানিকপুর সড়কের বাদশার টেক নামক স্থানে সড়কের ব্যারিকেট দিয়ে অবরোধ করে। ব্যারিকেট সরাতে চাইলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি সহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এতে বেশ কয়েক জন শ্রমিকসহ সাধারণ জনতা আহত হয়। এ সময় পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া-মানিকপুর সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পরিবেশে অধিদফতরের বিশেষ টিম ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একটি গাড়িবহর নিয়ে মানিকপুর এলাকার ইটভাটা ধ্বংস করতে আসে। এ খবর পেয়ে চকরিয়ার মানিকপুর এলাকায় ইটভাটার মালিক-শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা মানিকপুর সড়কের বাদশারটেক নামক স্হানে রাস্তার উভয় পাশে বেশকিছু ট্রাকগাড়ি রেখে অবরোধ করে অভিযান পরিচালনাকারী টিমকে আটকিয়ে দেয়।

এসময় সড়কের একদিকে পরিবেশ অধিদফতর, যৌথবাহিনী ও প্রশাসন অন্যদিকে মালিক-শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যারিকেট সরাতে চাইলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ব্যারিকেটদানকারীরা উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে অভিযান পরিচালনাকারী টিম সরে যেতে বাধ্য হয়।

উপস্থিত শ্রমিকরা বলেন, এলাকার অধিকাংশ সাধারণ জনগণ দিনমজুরি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বেছে আছে। তাদেরকে কোনো কর্মসংস্থান না করে কর্মস্হল বন্ধ করে দেয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে তারা। এখনো এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ, গত ১৬ নভেম্বর থেকে পরিবেশ অধিদফতর ও প্রশাসনের বিশেষ অভিযানিক টিম চকরিয়ার মানিকপুর ও লামার ফাইতং এর ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে তিনটি ঝিকঝাক পদ্ধতিতে করা ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়। এরপর চকরিয়া ও লামার শ্রমিকদের মাঝে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ অভিযান টিম কয়েক দফায় অভিযান চালাতে গেলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এদিকে অভিযানে এলাকার শ্রমজীবি মানুষদের আয় রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় হাজারো শ্রমিক অভিযান প্রতিরোধে সড়কে নেমে এসেছে। যার ফলে এলাকায় প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছে। শ্রমিকদের এ আন্দোলনের উত্তাপ যেনো চকরিয়া ও লামা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।

এলাকার শ্রমিকদের একটাই দাবি বিকল্প কর্মসংস্থান না করে তাদের বৃহত ‘কর্মসংস্থান ইটভাটা বন্ধ করা যাবে না।’

এদিকে তাদের এ দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক ও মানবিক মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনসাধারণ সংহতি প্রকাশ করেন।

সময় যত গড়াচ্ছে ততই শ্রমিক আন্দোলনে পরিধি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে দায়িত্বশীল কোনো মহল এগিয়ে আসেনি।

এদিকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে পূর্ব থেকে এ বিষয়ে কোনোধরণের অবগত করা হয়নি বলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।