বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, ‘দেশের যুব সমাজ আজ মাদকের ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত এ দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করতে হরেক রকমের মাদক সেবনের সুযোগ করে দিচ্ছে। যুব সমাজ ধ্বংস করতে পারলে একটি দেশ এমনিতেই ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু ছাত্রশিবির সেই যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়ে ন্যায় ও আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। ছাত্রশিবির আদর্শ ও ন্যায়ের প্রতীক।’
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মেহেরপুর পৌর হলে জেলা ছাত্রশিবির আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট কেনা সম্ভব নয়। তবে পাঁচ আগস্টের পর বিএনপি চাঁদাবাজির মাধ্যমে যে অর্থ সংগ্রহ করেছে তা ব্যবহার করে ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারে। জনগণের স্বার্থে কোনো অর্থ ব্যবহার করবে না তারা। তবে জনগণের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ থেকে ভোটের সময় কিছু টাকা বিলি করবে। পরবর্তী সময়ে বিএনপিকে ভোট দিলে তারা আবারো সেই টাকা উসুল করবে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ১৮৫ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। যারা নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারে না তারা কিভাবে একটি দেশ তথা দেশের জনগণের নিরাপত্তা দেবে? এখনো ৭০টি আসনে তারা তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেনি। কারণ এসব আসনে মনোনয়ন ঘোষণা করা হলে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। এরই মধ্যে যেসব আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সেসব স্থানে মনোনয়ন দ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগসহ নানা ঘটনা ঘটছে। চলছে পক্ষে ও বিপক্ষে মিটিং-মিছিলও।‘
ছাত্রশিবিরের এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘তাদের নেতা তারেক জিয়া লন্ডনে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নামের সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার বাড়ি আছে ও বুলেটপ্রুফ গাড়িও কেনা হয়েছে তবুও তিনি দেশে ফিরতে সাহস করছেন না। তাই আদর্শ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে সৎ লোকের বিকল্প নেই। জামায়াত-শিবির দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করেছে। জামায়াতের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের ফাঁসিতে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবুও কোনো নেতাকর্মী দেশ ছেড়ে পালায়নি। জামায়াত শিবিরের কেউ ধর্ষণ করেনি, লুটপাট করেনি, রাহাজানি করেনি তবুও তারা রাজাকার, আলবদর, রগকাটা ইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে দেশের মানুষকে বিভক্ত করে রাজনীতি করা দলের নেতাকর্মীরা আজ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের দেয়া ট্যাগ ব্যবহার করে ও ফ্যাসিস্টদের মতো জুলুম, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। অথচ যে সরকারের অধীনে তারা নির্বাচন করবে সেই সরকারে বৈধতা দিতে হলে আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণভোট দিতে হবে।’
ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা তাজউদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হুসাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমির সোহেল রানা, আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি আল আমিন বকুল ও জেলা শিবিরের সেক্রেটারি মো: সাইদুর রহমান।



