লালমোহনে ৮৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য!

‘যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই আমরা সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা করে শিক্ষা অধিদফতরে পাঠিয়েছি। আশা করি শিগগিরই শিক্ষক সঙ্কট কেটে যাবে।’

লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা

Location :

Lalmohan
লালমোহনে ৮৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য!
লালমোহনে ৮৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য! |নয়া দিগন্ত

দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৮৭টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান দিন দিন নিম্নগামী হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে এসব বিদ্যালয়।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, লালমোহনের নয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ২১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে (সদ্য জাতীয়করণকৃতসহ)। তার মধ্যে ৭২টি পুরাতন সরকারি এবং ১১৮টি বিগত সরকারের আমলের জাতীয়করণকৃত, এ ছাড়া ছয়টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

উপজেলার যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই সেগুলো হলো- বেদুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কুণ্ডের হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামারের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্বাসের পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এসবকাজিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফারজানা চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলোয়াখালী (কালামুলা) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব ধলীগৌরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর উদয়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর চর মোলাজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরভুতা খারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য লর্ডহার্ডিঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর পূর্ব অন্নদা প্রসাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম সৈয়দাবাদ মাওলানা সৈয়দ আহম্মদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বেদুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইলিশাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ ৮৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই দীর্ঘ দিন ধরে ।

দীর্ঘ দিন প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্থানীয় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের পাঠদান নিয়ে শঙ্কিত, কয়েকজন অভিভাবক জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকেন, বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসতে পারেন না। এছাড়া উপজেলার ২১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১২৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ থাকলেও সেখানে শূন্য রয়েছে ৭৪টি।

সূত্রে জানা যায়, এতগুলো সহকারী শিক্ষক শূন্য থাকলেও আবার অনেক সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ের পাঠদান রেখে আর্থিক সুবিধার জন্য বিভিন্ন তদবিরের মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিসিয়াল দায়িত্ব নিতে উঠে পরে লেগেছে। সমসাময়িক সময়ে তিনজন সহকারী শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষা অফিসে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

সচেতন মহল মনে করেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসে এমন কি মধু রয়েছে বিদ্যালয়ের পাঠদানের দায়িত্ব রেখে উপজেলা অফিসে দায়িত্বপালন করতে আসতে হবে? শিক্ষা অফিসে দায়িত্বশীল জনবল থাকলেও কিছু সহকারী শিক্ষককে আনঅফিসিয়ালি সংযুক্ত করা হয়েছে অফিসে, যা শ্রেণীর পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানান অনেকে।

আবুল কাশেম, শাহাবুদ্দিন মাস্টার, মো: শাহিন, মো: নুরুল ইসলাম নামের একাধিক সচেতন অভিভাবক বলেন, উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক শূন্যতার কারণে দিন দিন শিক্ষা ব্যবস্থা ঝিমিয়ে পড়েছে। মানসম্মত পাঠদানের লক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসকল বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের শূন্যতা পূরণ করার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শাহে আলম বলেন, ‘যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই আমরা সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা করে শিক্ষা অধিদফতরে পাঠিয়েছি। আশা করি শিগগিরই শিক্ষক সঙ্কট কেটে যাবে।’

কী কারণে ওই সব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা অফিসার বলেন, ‘অবসর গ্রহণ, বদলি ও মৃত্যুজনিত কারণে এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।’