নীলফামারী প্রতিনিধি ও কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা
অন্তবর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘অন্য দেশের তুলনায় ৫-৭ গুণ বেশি টাকা দিয়ে আমাদের দেশের মানুষ বিদেশে শ্রমিক হিসেবে যায়, এটা রাষ্ট্রের একটি ব্যর্থতা। এ জন্য দেশের জনগণকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে।’
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাবেক কৃতী শিক্ষার্থী হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সুধীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের গত ৬০ বছরে শিক্ষাখাতে এক অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটেছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। গ্রাম-গঞ্জের বিদ্যালয়গুলোতে এখন অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীই নারী।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীর উপস্থিতি শিক্ষার মানোন্নয়ন নয়; রাষ্ট্রে এর প্রভাব পড়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে। শিক্ষার এ অগ্রগতির পরও বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ অসন্তোষজনক।’ শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন বলেও মত দেন তিনি।
শিক্ষার উন্নয়ন হলেও সে তুলনায় শিক্ষাকদের বেতন-ভাতা তেমন বাড়েনি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আগের তুলনায় এখন শিক্ষকদের বেতন-ভাতা কিছুটা বেড়েছে।’
শিক্ষা ও শিক্ষকদের মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে লেখাপড়া ছাড়াই পাস করিয়ে দেয়ার প্রবণতা ছিল। বর্তমানে সেই অবস্থা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা চলছে। শুধু বরাদ্দ বাড়িয়ে নয়, বরং গুণগত মান বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করাও জরুরি।’
তিনি আরো বলেন, ‘জিডিপির ৫ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা প্রয়োজন। শিক্ষার গুণগতমান না বাড়ার কারণেই বিদেশে গিয়েও আমাদের শ্রমিকেরা প্রতারিত হচ্ছে।’ অন্য দেশের তুলনায় আমাদের শ্রমিকেরা ৭৫ শতাংশ কম বেতন পায় বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, তার বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে এই বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়েছিল। তখন এই বিদ্যালয় টিনের জরাজীর্ণ ঘর ছিল। টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে কুকুর ও গবাদি পশু প্রবেশ করত। আজকের মতো এত শিক্ষার্থী না থাকলেও পড়াশোনার মান ছিল ভালো। এই বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে তার শৈশবের অনেক স্মৃতি রয়েছে এখানে।
মাগুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা জামান তন্বী, মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান মিঠুসহ অনেকে।



