গফরগাঁওয়ে নিখোঁজ দুই শিশুর একজনের লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার

শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নিখোঁজের ২২ ঘণ্টার পর শিশু সিফাতের লাশ নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রফিকুল ইসলাম খান, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ)

Location :

Gaffargaon
সিফাত ও সাদাব
সিফাত ও সাদাব |সংগৃহীত

‎ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিখোঁজ দুই শিশুর মধ্যে সিফাত হাসান (১১) নামে এক শিশুর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নিখোঁজের ২২ ঘণ্টার পর শিশু সিফাতের লাশ নিজ বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত সিফাত উপজেলার পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরশাঁখচূড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে এবং চরশাঁখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল।

এদিকে, শনিবার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় পর্যন্ত অপর শিশু একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘীরপাড় (অতার বাড়ী) গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল-আমিনের ছেলে আইমান সাদাবকে (৫) উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এ ঘটনায় রাতেই পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সন্তান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার।

এদিকে শিশু নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

দুই শিশু নিখোঁজের পর রাত ১২টা দিকে দুর্বৃত্তরা উভয় পরিবারে লোকজনের কাছে শিশুদের ফেরত চেয়ে মুক্তিপণ হিসেবে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেছেন বলে শিশুদের পরিবারের সদস্যরা জানান। এরই মধ্যে নিহত সিফাতের ভাই জিসান (মোবাইল নম্বর-01765-044150) এই নম্বরে দুই হাজার টাকা বিকাশ করে।

পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার বেলা ১২ টায় দিকে উপজেলার চরশাঁখচূড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে সিফাত বাড়ি সামনে থেকে নিখোঁজ হয়। অপরদিকে একই সময়ে দিঘীরপাড় গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল আমিনের ছেলে সাদাব বাড়ি পাশে দোকানে হালখাতা অনুষ্ঠানে মাইক বাজার শব্দ শুনে দোকানে সামনে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় সাদাব। এ ঘটনার এক দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত শিশু সাদাবের কোনো সন্ধান মেলেনি।

শিশু সাদাবের নানা সুলতান মিয়া বলেন, ‘শিশুটি বাবা বিদেশ থাকেন। বাড়ি পাশ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘরিয়া (আকন্দ বাড়ি) গ্রামে। মা-ছেলে আমার বাড়িতেই থাকে। আমার নাতিকে কে বা কারা নিয়ে গেছে কিংবা কেউ ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলেছে কিনা, কিছুই বলতে পারছি না।’

শিশুর ফুফু বলেন, ‘আমরা নিখোঁজ সাদাবের সন্ধান চাই। আশপাশের পুকুর-ডোবা ও স্বজনদের বাড়িঘর তল্লাশি চালানো হয়েছে, কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি।’

নিখোঁজের মামা জাকির বলেন, ‘তার কাছে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল দুর্বৃত্তরা।’

এ বিষয়ে পাঁচবাগ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মান্নান বলেন, ‘এক শিশুর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশী তৎপরতা বাড়িয়ে অপর শিশুটিকে উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে।’

এদিকে থানার ওসিসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন।

এ ব্যাপারে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, নিখোঁজ সিফাতের লাশ উদ্ধার হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অপর শিশু সাদাবের নিখোঁজের ব্যাপারে এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে তার ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে। এছাড়াও এ ঘটনাগুলোর সাথে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও ওসি জানান।