উজানের দেশ ভারতের সিকিম ও বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে ফুলেফেঁপে ওঠা তিস্তার পানি আজ সকাল থেকে হু হু করে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীটির পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে তিস্তার পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যারেজ এলাকার ৪৪টি দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যারের পাশে ফ্লাটবাইপাস সড়কও ভেঙে দেয়া হতে পারে বলে সতর্ক করেছে পাউবো।
চলতি বন্যা মৌসুমে পাঁচ বার তিস্তার পানি বিপদসীমা ও তার উপর দিয়ে অতিক্রম করে এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বন্যা হওয়ার পর আবারো দীর্ঘমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনগণ।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিস্তার পানি ৫২.৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর।
ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নিম্ন অঞ্চল এলাকাগুলোতে মাইকিং করা হয়েছে। এতে ওই অঞ্চল থেকে মানুষ তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে উঁচু ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, ‘তিস্তার পানি উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং রাস্তাঘাট ও বাধ ভেঙে গিয়ে যাতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ না করে সেজন্য জিও ব্যাগসহ সর্বাত্মক প্রস্তুতি দিয়ে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘আকস্মিক তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পাঁচ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সর্বাত্মক সহযোগিতা, সতর্ক ও খোঁজখবর রাখার জন্য বলা হয়েছে। নিম্ন অঞ্চলগুলোতে ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি ও স্থায়ী হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’