ঢামেকে রোগী ভাগাভাগি ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৭

জরুরি বিভাগের সামনে ও হাসপাতালের বাইরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

Location :

Dhaka City
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল |সংগৃহীত

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ রোগীর ভাগাভাগি ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দালালচক্রের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রথমে জরুরি বিভাগের সামনে এবং পরে হাসপাতালের পাশে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে শাহাদাত গ্রুপের নওশাদ, আনিসুর রহমান ও রিপু এবং রিয়াজ-বিল্লাল গ্রুপের ইমন, বাঁধন ও সুমন রয়েছেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ইমনের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে এবং বাঁধনের হাত ভেঙে গেছে।

হাসপাতালের কর্মচারীরা জানায়, আইসিইউ রোগী ভাগাভাগি ও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রথমে নওশাদকে মারধর করা হয়। পরে শাহাদাত গ্রুপ পাল্টা হামলা চালায়।

ওয়ার্ড মাস্টার মোহাম্মদ শিপন জানান, শাহাদাত গ্রুপ ঢামেক থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। এ নিয়ে ইমনসহ কয়েকজন আপত্তি করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

অভিযোগ অস্বীকার করে দালালচক্রের নেতা শাহাদাত বলেন, ‘বুধবার রাতে জরুরি বিভাগের সামনে বিল্লাল, সুমন, নাসির, ইমন, দুলাল, শাফিনসহ কয়েকজন আমাদের লোক নওশাদকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের মালিক আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে এলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও একপর্যায়ে মারামারি হয়।’

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের মালিক আনিসুর রহমানও দাবি করেন, ‘জরুরি বিভাগের সামনে আমার গাড়িচালক নওশাদকে মারধর করা হয়। আমি বিষয়টি জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপরও হামলা চালায়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাধারণ কর্মচারী জানান, হাসপাতালের কর্মচারী সমিতির নেতারা অর্থের বিনিময়ে দালালচক্রকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, যার ফলে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটছে।

তারা জানান, দুই গ্রুপই বিএনপি সমর্থিত এবং সাধারণ কর্মচারী ও রোগীর স্বজনরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এটি নিজেদের মধ্যে মারামারি। অ্যাম্বুলেন্স না থাকলে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হন, আবার অ্যাম্বুলেন্স থাকলে রোগী নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আমাদের কোনো কর্মচারী এসব ঘটনায় জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক জানান, ‘জরুরি বিভাগের সামনে ও হাসপাতালের বাইরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, এর আগে রোগী ভাগিয়ে নেয়াকে কেন্দ্র করে আরেকটি সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও শাহাদাতকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।