বাংলাদেশ-ভারতের স্বার্থরক্ষায় মুহুরি নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি

ভারতের উজানে বন্যার পানির তোড়ে সম্প্রতি মুহুরি নদী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ৩৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে ফেনীর সীমান্তবর্তী ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

Location :

Feni
মানববন্ধনে ৫৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশ নেয়
মানববন্ধনে ৫৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অংশ নেয় |নয়া দিগন্ত

আবুল হাসান, ছাগলনাইয়া-পরশুরাম (ফেনী)

পরশুরাম-ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার দুঃখ হিসেবে পরিচিত ভারত সীমান্তবর্তী ফেনীর মুহুরি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে পরশুরামে ৫৫টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যৌথভাবে এ মানববন্ধন করে।

জানা যায়, ত্রিপুরার বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতের উজানে বন্যার পানির তোড়ে সম্প্রতি মুহুরি নদী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ৩৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ে। এতে ফেনীর সীমান্তবর্তী ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ২০২৪ সালেও ওই নদীগুলোর বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ে ভয়াবহ বন্যায় ফেনীর কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতির শিকার হয়। গত কয়েকদিনে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় নদী ভাঙন এলাকাসহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এবারের বন্যায়ও তিনটি উপজেলাবাসীর ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকার বলেছে জানিয়েছে সূত্র।

ঘটনায় বন্যার পানি শুকানোর আগেই নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধের টেকসই সংস্কার ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাঁধের নির্মাণের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, ফেনী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, ছাগলনাইয়া পৌর শহরের জমাদ্দার বাজারে বিভিন্ন সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন করে ক্ষতিগ্রস্তরা।

একই দাবিতে পরশুরাম উপজেলায় আয়োজিত গতকালের মানববন্ধনেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন বক্তারা। মানববন্ধনে ফেনী জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে অপসারণ ও শাস্তি প্রদান, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প একনেকে পাশ করে বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব প্রদান, প্রতিমাসে ফেনী পাউবো প্রকাশ্যে গণশুনানির মাধ্যমে জনগণকে বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণের তথ্য জানানো, বন্যার জন্য ত্রুটিযুক্ত বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা ও নতুন টেকসই বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি বাঁধ সংরক্ষণের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভারতের উজান থেকে ধেয়ে আসা বন্যার অস্বাভাবিক পানি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ছেড়ে দেয়াসহ বন্যার স্থায়ী সমাধানে ভারতে সাথেও এ ব্যাপারে আলোচনা করে মুহুরি নদীর বল্লা মুখা বাঁধের জিরো পয়েন্টে দু’দেশের স্বার্থ রক্ষা করে স্থায়ী সমাধানের কথা জানান স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা।

সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আয়োজিত ও সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি ইমাম হোসেন সজীবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে পশ্চিম অলকায় মুহুরি নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙনে ঘরহারা মাসুম চৌধুরী, পরশুরাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এ হাসান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক শাসুল আলম শাকিল, মো: মোস্তফা, কাজী ইউছুফ বাপ্পি, হাকিম আলী জয়, চৌধুরী রাকিব, এনামুল করিম আজাদ, মাওলানা মোহাম্মদ আবু তাহের ভূঁঞা, মো: নাঈম, মো: ইউনুছ, শাহিদুল আফসার, আবদুল কাদের, আবু হানিফ হেলাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।