সিলেটে চা বাগানে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেফতার

গ্রেফতারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
সিলেটে চা বাগানে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেফতার
সিলেটে চা বাগানে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেফতার |নয়া দিগন্ত

সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের নির্জন টিলা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা নারীর লাশের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত রাবেয়া বেগম (২৫)-এর স্বামী ফারুক আহমদকে গ্রেফতার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।

আজ সোমবার ভোরে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার থানার রাঙ্গারচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে সিলেট এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।

ফারুক সুনামগঞ্জ সদর থানার রাঙ্গারচর গ্রামের ওমান ফেরত আব্দুল আজিজের ছেলে এবং রাবেয়া বেগম দোয়ারা বাজার থানার মওলারপাড় গ্রামের মরহুম মাহতাব মিয়ার মেয়ে।

পুলিশ জানায়, গত ১৪ অক্টোবর সিলেট মহানগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন লাক্কাতুরা চা বাগানের ভাইগণ নামক টিলার ঝোপঝাড় থেকে এক নারীর আংশিক পচনধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরনে ছিল লাল জমিন ছাপা শাড়ি, হালকা গোলাপি বোরকা এবং গলায় পেঁচানো হলুদ ওড়না। পাশে পাওয়া যায় একটি লেডিস হ্যান্ডব্যাগ, যাতে ছিল কিছু জামাকাপড় ও একটি ছোট মেমোরি কার্ড। পিবিআই ও সিআইডি আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করলেও পচনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে মেমোরি কার্ডে থাকা মোবাইল কথোপকথনের অডিও বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট নম্বরের সিডিআর সংগ্রহ করে পুলিশ মৃত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে অগ্রগতি ঘটে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে নিহতের স্বামী ফারুক আহমদের নাম।

পুলিশ আরো জানায়, গ্রেফতারের পর প্রাথমিকভাবে ফারুক হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করলে তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

ফারুক জানান, ওমানে অবস্থানকালে স্ত্রী রাবেয়া বেগমের আগের বিয়ে গোপন রাখা এবং পরে অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলছিল। গত ১৩ অক্টোবর তিনি স্ত্রীকে নিয়ে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের কথা বলে সিলেটে আসেন। জিয়ারত শেষে বেড়ানোর কথা বলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর-পূর্ব দিকের নির্জন টিলায় নিয়ে গিয়ে বিকেল ৪টার দিকে ফুফাতো ভাই আলামিনের সহায়তায় রাবেয়া বেগমকে গলা টিপে হত্যা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের চাচা রিপন মিয়া থানায় ফারুক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রোববার আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মিডিয়া (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।