মুরাদনগরে পরকীয়ার শাসন করায় খুন : ২ দিন পর লাশ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা সদরের ইউসুফনগর গ্রামের অভিযুক্ত প্রেমিক ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নাজিম উদ্দিন, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

Location :

Muradnagar
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা এবং (ইনসেটে) নিহত মনির
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতা এবং (ইনসেটে) নিহত মনির |নয়া দিগন্ত

কুমিল্লার মুরাদনগরে পরকীয়া প্রেমের জন্য শাসন করায় প্রেমিককে দিয়ে আপন ভাসুরকে খুন করিয়েছেন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। খুনের দু’দিন পর প্রেমিক ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে মুরাদনগর উপজেলা সদরের ইউসুফনগর গ্রামের অভিযুক্ত প্রেমিক ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত মনির (৪০) একই ইউনিয়নের ইউসুফনগর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।

অভিযুক্ত শাহিদা আক্তার (২২) নিহত মনিরের ছোট ভাই তাজুল ইসলামের স্ত্রী ও প্রেমিক ইব্রাহিম (২০) একই গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে।

সরেজমিনে জানা যায়, নিহত মনিরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শাহিদা আক্তারের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান ইব্রাহিম। বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৫ দিন আগে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শাহিদা আক্তারকে ঘরোয়াভাবে শাসন করেন ভাসুর মনির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদা আক্তার ও তার প্রেমিক ইব্রাহিম সিদ্ধান্ত নেন ভাসুর মনিরকে মেরে ফেলার। তাদের সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে এশার নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় মনিরকে খুন করেন ইব্রাহিম। খুনের পর মনিরের লাশ ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচে চাপা দেয়া হয়।

এদিকে, এই ঘটনা দেখে ফেলেন ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগম। এ বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ইব্রাহিম তার মা আমেনা বেগমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। প্রাণনাশের ভয়ে ঘটনার দু’দিন মুখ বন্ধ রাখলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়দের চাপে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগম। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ইব্রাহিমের বসতঘরের মাটির নিচে পুঁতে রাখা মনিরের লাশ শনাক্ত করে এলাকাবাসী।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মনিরের লাশ উদ্ধার করে মুরাদনগর থানা পুলিশ।

এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাহিদা আক্তার ও তার প্রেমিক ইব্রাহিম এবং ইব্রাহিমের মা আমেনা বেগমকে এলাকাবাসী আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা শাহিদা আক্তার ও ইব্রাহিমের বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান তিনজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান।