নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার অন্যতম নৌ-রুট নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাটা সিট্রাক সার্ভিস ও তমরদ্দিঘাট-ঢাকা লঞ্চ সার্ভিসে সম্প্রতি যাতায়াত সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আবহাওয়ার ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেতের কারণে নৌ-যান চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপবাসী টানা চার থেকে পাঁচ দিন বন্দিদশায় পড়ে থাকছেন। ভুক্তভোগীরা এ অবস্থাকে ‘আইল্যান্ড ক্যাপটিভিটি’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
স্বাধীনতার পরই চরজব্বর সিট্রাক সার্ভিস চালু হলেও তমরদ্দিঘাট-ঢাকা লঞ্চ সার্ভিস চলছে প্রায় ২৮ বছর ধরে। তবে গত তিন মাস ধরে ৩ নম্বর সঙ্কেতের অজুহাতে সরকারি নির্দেশনায় সব নৌ-যান বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থী ভর্তি, চাকরির সাক্ষাৎকার, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা প্রয়োজনে দ্বীপবাসী দুর্ভোগে পড়ছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিন নিজাম জানান, ‘ঢাকার লঞ্চ চাঁদপুরের উত্তাল নদী পেরিয়ে হাকিমুদ্দিন ঘাটে পৌঁছালেও হাতিয়ার নদীপথ অপেক্ষাকৃত শান্ত। তবুও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হচ্ছে। জরুরি রোগী, পর্যটক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীরা কাঠবডি ট্রলারে হাকিমুদ্দিন গিয়ে লঞ্চে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। আধুনিক নৌ-যান না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
ব্যবসায়ীরা জানায়, অর্ডারকৃত মালামাল ঢাকার পার্টিকে টাকা পাঠিয়ে দেয়ার পরও লঞ্চ আট দিন পর তমরদ্দিঘাটে পৌঁছায়। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও ব্যবসা বন্ধের উপক্রম হয়।
তাসরিফ-১ লঞ্চের মাস্টার রফিক জানান, হাকিমুদ্দিন পর্যন্ত নদী বন্দর এলাকা হলেও পরবর্তী অংশ সামুদ্রিক। ৩ নম্বর সঙ্কেত পেলে বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কেউই দায়িত্ব নিতে চান না।
তমরদ্দি বাজারের ব্যবসায়ী শেখ জালিশ মাহমুদ বলেন, গত তিন মাস ধরে সঙ্কেতের অজুহাতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী, ডাক্তার, কুরিয়ার সার্ভিসসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে গত রোববার হাতিয়া উপজেলা উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সভার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আলাউদ্দিন জানান, যাতায়াতে নৌ-যানের দুর্ভোগ বিষয়ে রেজুলেশন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।