পদ্মা সেতুতে এক দিনে টোল আদায় সর্বোচ্চ রেকর্ড

পদ্মা সেতুতে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পারাপারের গাড়ির সংখ্যা ৫২হাজার ৪৮৭টি। যা পদ্মা সেতুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপার।

গোলাম মঞ্জুরে মাওলা অপু, লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ)

Location :

Louhajang
টোল আদায় হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা
টোল আদায় হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা |সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর চালুর পর গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) স্পর্শ করে টোল আদায়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড। এদিন পদ্মা সেতুতে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পারাপারের গাড়ির সংখ্যা ৫২হাজার ৪৮৭টি। যা পদ্মা সেতুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপার।

গত ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। যা পদ্মা সেতুর টোল আদায়ে এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নয়া দিগন্তকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ নিলয়।

সেতু কর্তৃপক্ষের টোল রিপোর্টের ইতিপূর্বের রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২৬ জুন সেতু চালু হওয়ার পর এক দিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড হয়েছিল ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল। ওই দিন মোট ৪৫ হাজার ২০৪টি যানবাহন থেকে চার কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছিল। একই বছরের ১৪ জুন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে যায়। সেদিন ৪৪ হাজার ৩৩টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ ৩০ হাজার ১০০ টাকা।

আর ২০২৩ সালের ২৭ জুন সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ১৩৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল। সেদিন টোল আদায় হয়েছিল চার কোটি ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকা। ২০২৪ সালের ১৫ জুন চতুর্থ সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে যায়। সেদিন ৩৯ হাজার ২৬টি যানবাহন থেকে টোল আদায় হয়েছে চার কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার ৩০০ টাকা।

সেতু চালুর পর এ চার দিন টোল আদায়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল।

এদিকে গত ঈদুল ফিতরের সময় ২৮ মার্চ পদ্মা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত দিয়ে মোটরসাইকেলসহ মোট ৩৯ হাজার ৬৩৭টি যানবাহন পারাপার করা হয়। এতে মোট টোল আদায় হয়েছিল চার কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ৩০০টাকা। এটি টোল আদায়ে ৫ম রেকর্ড হলেও পদ্মা সেতুর চালুর পর নতুন করে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পদ্মা সেতুর ইতিহাসে টোল আদায়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে।

এবারের ঈদযাত্রায় সেতুতে যানবাহন পারাপার ও টোল আদায়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল।

এবারের ঈদযাত্রায় এ নিয়ে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজা দিয়ে গত আট দিনে দক্ষিণবঙ্গ ও ঢাকাগামী প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার ২১৯টি বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন পারপার হয়েছে।

প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২৩ জেলার ঘরমুখো মানুষ ছুটে চলেছেন নিজ গন্তব্যে।

ঈদের ছুটির শুরুতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ঘরমুখো মানুষের গণপরিবহনের বাড়তি চাপ দেখা দেয়। রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিণবঙ্গগামী গণপরিবহনগুলো একসাথে টোলপ্লাজায় চলে এলে গণপরিবহনের পাশাপাশি মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপও বেড়ে যায়। এ সময় মাওয়া টোলপ্লাজা থেকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা দিলেও সেগুলো কিছুটা ধীরগতিতে টোলপ্লাজা অতিক্রম করছিল। এ সময় সেতুর দুই প্রান্তে আটটি করে টোলবুথসহ উভয় প্রান্তে মোট ১৬টি বুথ সার্বক্ষণিক সচল ছিল।

সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ নিলয় আরো জানান, এদিন মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্লাজা হয়ে যানবাহন চলাচল অনেক বেড়ে গিয়েছিল। অন্য দিনের থেকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চাপ বেশি থাকায় এ সময় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন ছিল। তবে সেগুলো ধীরে ধীরে টোলপ্লাজা অতিক্রম করছিল।