কটিয়াদীতে পাওনা টাকা নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন

গত বুধবার রাতে ভরারদিয়া গ্রামে আল্লাদু পাগলার মাজারে গানের সময় মোমবাতি নিভানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটলে পুলিশ গান বাজনা বন্ধ করে দেয়।

কটিয়াদি (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Kishoreganj
কটিয়াদীতে পাওনা টাকা নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন
কটিয়াদীতে পাওনা টাকা নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী খুন |নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌর এলাকায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রবাসীর ছোট ভাই কটিয়াদী সরকারি কলেজের ছাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো: জিদনী মিয়াকে (১৭) প্রতিপক্ষ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

শুক্রবার (৭ জুন) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে জানাযার নামাজের পর পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত জিদনি পৌর এলাকার ভরারদিয়া গ্রামের মরহুম ধলু মিয়ার ছোট ছেলে।

জানা যায়, ভরারদিয়া গ্রামের ছালামিন ও চড়িয়াকোনা গ্রামের অভিযুক্ত ফয়সালের আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। ধলু মিয়ার চার ছেলের মধ্যে তিনজন প্রবাসে থাকেন।

চড়িয়াকোনা গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে ফয়সাল আত্মীয়তার সুযোগে বিশেষ প্রয়োজনে প্রবাসী ছালামিনের নিকট বেশ কিছুদিন পূর্বে ৫০ হাজার টাকা ধার চায়। ছালামিন আত্মীয়তার সৌজন্যে ফয়সালকে টাকা ধার দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। টাকা চাইলে নানা টালবাহানা করে।

সম্প্রতি ছালামিন বাড়িতে আসার পর ফয়সালের নিকট পাওনা টাকা ফেরত চায়। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ফয়সাল টাকাতো দেয়ই নাই উল্টো এর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়। ইতিমধ্যে ছালামিনের ছুটি শেষ হয়ে গেলে সে তার কর্মে প্রবাসে ফিরে যায়। কিন্তু ফয়সালের প্রতিশোধের নেশা রয়ে গেছে।

গত বুধবার দিবাগত রাতে জিদনী তার বাড়ির পাশে আল্লাদু পাগলার আস্তানার পাশে চায়ের দোকানে বসে চা পান করার সময় ফয়সালের সঙ্গী তাকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে বাড়ির অদূরে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফয়সাল কতক সঙ্গী নিয়ে অপেক্ষা করে। জিদনী সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। জিদনীকে উদ্ধার করে প্রথমে বাজিতপুর বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসার এক পর্যায়ে পুনরায় বাজিতপুর বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় অবস্থার অবনতি ঘটে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বোন ময়না আক্তার বলেন, ‘ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ভাই হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।’

কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: তরিকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার রাতে ভরারদিয়া গ্রামে আল্লাদু পাগলার মাজারে গানের সময় মোমবাতি নিভানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটলে পুলিশ গান বাজনা বন্ধ করে দেয়। পরে জানতে পারি টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে একজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বোন ময়না বাদি হয়ে ফয়সালসহ নয়জনকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা কয়েক ব্যক্তিকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।