সিলেটে চা-বাগানের ভূমি ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ

শনিবার (১৭ মে) সকাল ১১টার দিকে পাঁচ গ্রামের বাসীন্ধারা আয়োজিত চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্রিখেল শাহী ঈদগাহ হতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে এসে শেষ হয়।

জৈন্তাপুর (সিলেট) সংবাদদাতা

Location :

Jointapur
চা বাগান লিজ বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
চা বাগান লিজ বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ |নয়া দিগন্ত

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত দি মেঘালয় টি এস্টেট অ্যান্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিমিটেড নামের চা-বাগানের ভূমি ইজারা বাতিলের দাবিতে পাঁচ গ্রামের বসতভিটা রক্ষা ও প্রতিটি পরিবারের নামে স্থায়ীভাবে ভূমি বন্দবস্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) সকাল ১১টার দিকে পাঁচ গ্রামের বাসীন্ধারা আয়োজিত চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্রিখেল শাহী ঈদগাহ হতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে এসে শেষ হয়।

এর আগে একই দাবিতে গত (৫ মে) মানববন্ধন ও (৮ মে) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে এলাকাবাসী।

সমাবেশে শামসুল হকের সভাপতিত্ব ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জৈন্তাপুর উপজেলা শাখার সাবেক আমির নাজমুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল, ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, জহিরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল খালিক, তাজুল ইসলাম, মখলিসুর রহমান, কবির আহমেদ, আমির আলি মেম্বার। এ সময় সমাবেশে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা আবদুল মালিক।

বক্তারা বলেন, ‘পাঁচ গ্রামের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে জারি করা অবৈধ ইজারা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। তারা বলেন, ইতোমধ্যে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ পরবর্তী আন্দোলন চলমান রয়েছে।’

গত (১৪ মে) অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের নিকট চারিকাটা ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের দফতরে উপস্থিত হয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং বিস্তারিত কথা বলেন এবং একটি দরখাস্ত প্রদান করা হয়েছে। পাঁচ গ্রামবাসীর একটাই দাবি দরখাস্ত প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল যেন চারিকাটা এলাকায় পরিদর্শন করতে আসেন। এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলোর বিষয়ে তাদের ধারণাগুলো যেন স্পষ্ট হয়। চারিকাটা ইউনিয়নের হতদরিদ্র ভূমিহীন বাসিন্দারা ওই ইউনিয়নের ভিত্রিখেল পূর্ব, ভিত্রিখেল পশ্চিম, ভিত্রিখেল উত্তর, নয়াখেল উত্তর, নয়াখেল দক্ষিণ এই পাঁচ গ্রামের বসতবাড়ি নির্মাণ করে বংশানুক্রমে বসবাস করে আসছেন। পাঁচ গ্রামের অন্তত দু’হাজার ৩০০ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোক বসবাস করেন।

বিগত ২০০৮ সাল থেকে এলাকাবাসি ‘দি মেঘালয় টি এস্টেট অ্যান্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিমিটেড কোম্পানির নামে ভূমি বন্দবস্তের প্রক্রিয়া বাতিল করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একজন মন্ত্রীর আত্মীয় রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে দি মেঘালয় টি এস্টেট অ্যান্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিমিটেডের চা-বাগানের নামে ভূমির লিজ নিয়েছিলেন।

দি মেঘালয় টি এস্টেট অ্যান্ড খোদেজা বহুমুখী ফার্ম লিমিটেডের চা-বাগানের ভূমির ইজারা বাতিল করে সরেজমিনে তদন্ত করে এখানে বসবাসরত ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত প্রদান করার দাবি জানানো হয়েছে।

এলাকায় কোনো পরিবার ভূমিহীন কিংবা রোহিঙ্গাদের মত বেঁচে থাকতে চায় না। উপদেষ্টা বরাবর দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের ভিতরে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়।

নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় যেকোনো কঠোর কর্মসূচি দিতে পাঁচ গ্রামের মানুষ প্রস্তুত রয়েছেন। চলমান এই আন্দোলন প্রয়োজনে চারিকাটা এলাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে পুরো উপজেলার মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।