গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠানে বরের মৃত্যু

তড়িঘড়ি করে গাড়িতে তুলে হাসপাতালের রাস্তায়। অমনি শেষ নিশ্বাস ছাড়েন বর। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে নিস্তব্ধতা। ভেসে আসে কান্নার রোল।

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) সংবাদদাতা

Location :

Chandpur
গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বর
গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বর |প্রতীকী ছবি

রাত পোহালেই বাজবে সানাই। জমেছে বাড়িভর্তি অতিথি। এদিকে সন্ধ্যা গড়িয়ে শুরু হয়েছে রাত। একে একে বরের গায়ে হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছেন স্বজনরা। মেতে উঠেছেন বিয়ের আমেজে। হঠাৎ আতকে উঠেন তাদের একজন। অসুস্থ হয়ে কথা বন্ধ হয়ে যায় বরের। শুরু হয় চিৎকার!

তড়িঘড়ি করে গাড়িতে তুলে হাসপাতালের রাস্তায়। অমনি শেষ নিশ্বাস ছাড়েন বর। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে নিস্তব্ধতা। ভেসে আসে কান্নার রোল। এদিকে খবর ছড়িয়েছে কনের বাড়িতেও। বাকরুদ্ধ কনেসহ পুরো পরিবার। পলকেই থমকে যায় রঙিন সব স্বপ্ন। চোখ থেকে ঝরে পড়ে কয়েক ফোটা অশ্রু। শেষ হয় এক অধরা গল্পের!

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে চাঁদপুর হাজীগঞ্জের দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বর রনি মিজি। আজ দুপুরে বসার কথা ছিল তার বিয়ের পিঁড়িতে।

নিহত রনি মিজি ওই বাড়ির বিল্লাল মিজির ছেলে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয় তার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন রনি। পড়ালেখার সময় পাশের শাহরাস্তি উপজেলার এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে শুক্রবার বিয়ের দিন ঠিক হয়। একইসাথে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় তাদের।

তবে গাঁয়ে হলুদের উৎসব চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে বরের মৃত্যুর খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েন কনেসহ তার প্রবাসী বাবা। বর্তমানে কনেকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে এবং বাবা বিদেশে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া বলেন, ‘রনি মিজির দাফন-কাফনে উপস্থিত ছিলাম। তার মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’