২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলার ৭৭৭টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। সংস্থাটির উদ্যোগে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত মূল্যায়ন সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
ফেনী রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন আহমেদ মিষ্টারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: ইসমাইল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ফেনীর ভৌগোলিক অবস্থান বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। নদীগুলোতে পলি জমে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এজন্য নদী শাসন ও জনসচেতনতা জরুরি। ফুলগাজী-পরশুরামের মতো নিচু এলাকায় ঘরবাড়ি নির্মাণে উঁচু ভিটি গড়ার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। ফেনীতে ভবিষ্যতেও বন্যা হতে পারে, তাই জরুরি ভিত্তিতে রেসকিউ সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।’
ফেনী জেলা যুব রেড ক্রিসেন্টের উপ-যুব প্রধান আবদুর হালিম জুলহাসের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট সদর দফতরের ডিআর ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক শাহীনুর রহমান, আইএফআরসি সিনিয়র ম্যানেজার হাসিবুল বারি রাজীব, লাইভলিহুড ম্যানেজার মেহেদি হাসান শিশির।
এছাড়া সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফেনী রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যনির্বাহী সদস্য আ.ন.ম আবদুর রহীম, মুহাম্মদ ফজলুল হক, রশিদ আহমদ মজুমদার, যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের দুর্যোগ ও মানবিক বিভাগীয় উপপ্রধান ফাতেমা আক্তার, স্বেচ্ছাসেবক নাজমুল ইসলাম, ছাগলনাইয়া উপজেলার কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন, ফরহাদনগর ইউনিয়নের ইসরাত জাহান, দুর্গা রানী দাস, নুরুল আলম এবং পরশুরাম উপজেলার জাবেদ হোসেন।
সভায় জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর জিমরান মোহাম্মদ সায়েক, সহকারী কমিশনার অশোক বিক্রম চাকমা, রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফ আজম ও আবদুল্লাহ আল জোবায়ের, ইউনিট লেভেল অফিসার আবদুল মান্নানসহ যুব সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সভায় এনডিআরসি সদস্যরা রেড ক্রিসেন্টের বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম নিয়ে গ্রুপ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২৭ পরিবারকে ঘর, ৩১১ পরিবারকে ল্যাট্রিন এবং ২৩৯ পরিবারকে জীবিকায়ন সহায়তা দিয়ে মোট ৭৭৭ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়া ১০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা এবং সাড়ে ৬ হাজার পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
সংস্থাটি আরো জানায়, ৫৫০০ পরিবারকে ৬ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা, ৫৭০টি ত্রিপল বিতরণ, ২৩টি স্থানে ১২ দিনব্যাপী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, ৫৮০০ পরিবারকে হাইজিন সামগ্রী, ১ম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ৫৫০ শিশুকে হাইজিন কিটস, ৩০টি নতুন টিউবওয়েল স্থাপন, ২০টি পুরাতন টিউবওয়েলের গোড়া পাকাকরণ, ৭৬০০টি ফলজ ও ওষুধি গাছের চারা বিতরণ, ৪৬৯ জনকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে সহায়তা এবং ৩০০ পরিবারকে ১০ ধরনের শীতকালীন সবজি বীজ সরবরাহ করা হয়েছে।