যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় হিন্দু শিক্ষকদের বিচারক করায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ইচ্ছামতো তাদের বিচারক করেছেন। গত ২৭ জুলাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
তারা আরো জানায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কোনো বিষয়ে স্কুলের সভাপতি জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলামের পরামর্শ গ্রহণ করছেন না। যে কারণে একের পর এক বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। তার কারণে ঐতিহ্যবাহী স্কুলটির সুনাম হারাতে বসেছে। বিরাজ করছে বিশৃঙ্খল অবস্থা।
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে কোরআন তেলোয়াত, হামদ ও নাত, ইসলামি সংগীত কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনে প্রভাতী শিফটে চতুর্থ শ্রেণিতে পলাশ কুমার রায়, পঞ্চম শ্রেণিতে রাজু বিশ্বাস ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে শ্রাবণী পালকে বিচারক করা হয়। একইভাবে দিবা শাখায় তৃতীয় শ্রেণীতে অনিতা রাণী দাশ, ষষ্ঠ শ্রেণিতে নন্দ কুমার অধিকারী, অষ্টম শ্রেণিতে অমিতা গুপ্ত ও দশম শ্রেণিতে মৃনালিনি ভদ্রকে বিচারক করা হয়। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক বলেন, ঐতিহ্যবাহী একটি স্কুলে এত শিক্ষক থাকতে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবীর মতো একটি প্রতিযোগিতায় হিন্দু শিক্ষকদের বিচারক কেন করা হবে? এখানে কি মুসলমান শিক্ষক নেই? তাহলে তাদের বাদ দিয়ে হিন্দুদের বিচারক করার অর্থ কি?
কোনো কোনো অভিভাবক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তার অনুসারীদের বাইরে তেমন কাউকে বিচারক করেননি। তিনি গ্রুপবাজি করেছেন। এ কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া, তিনি যদি সভাপতির সাথে পরামর্শ করতেন তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কোরআন তেলাওয়াতে কোনো হিন্দু শিক্ষককে বিচারক করা হয়নি। তবে, অন্যান্য প্রতিযোগিতায় হিন্দু শিক্ষকদের বিচারক করা হয়েছে। এর আগে কী হয়েছে না হয়েছে সেটি আমি জানি না।’
বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের কাছে জানতে তাকে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এসএমএস করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।