দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চামড়ার বাজার যশোরের রাজারহাট। সে বাজারে এসে এবার লোকসানের শিকার হয়েছেন অধিকাংশ বিক্রেতা। কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এদিকে গরুর চামড়া কোনোভাবে বিক্রি করতে পারলেও ছাগলের চামড়া অনেকেই বাজারে ফেলে দিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। ফলে ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের চোখে-মুখে দেখা গেছে হতাশার ছাপ।
মঙ্গলবার (১০ জুন) যশোরের রাজারহাটে সরকার নির্ধারিত দামে কোনো চামড়া বিক্রি হয়নি। ফলে কোরবানিতে ব্যবসায়ীরা যে অর্থ লগ্নি করেন তা ওঠেনি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।
এদিকে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া থেকে ১০০ পিস ছাগলের চামড়া এনে বিক্রি করতে না পেরে ফিরে যান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভক্তি বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘সরকার খাসির চামড়ার প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আড়তদাররা পুরো চামড়ার দামই বলছে ২০ টাকা। বিক্রি করার কোনো উপায় নেই।’
আব্দুর রাজ্জাক নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘১৮৯ পিস ছাগলের চামড়া ১০ টাকা করে জোর করে একজনের কাছে বিক্রি করেছি। অথচ গ্রাম থেকে প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে কিনেছি। এদিকে অন্য খরচ হিসাবের বাইরেই রয়েছে।’
এদিকে মঙ্গলবারের হাটে ১০০ গরুর চামড়া গড়ে ৫০০ টাকা করে কেনার কথা জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার।
ইজারাদার, আড়তদার ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির পরে যশোরের প্রথম হাটে চামড়া উঠেছিল মাত্র তিন থেকে চার হাজার পিস। যার অধিকাংশই গরুর চামড়া।
হাটের ইজারাদার খুরশিদ আলম বাবু বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২০ জেলা থেকে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা রাজারহাটে চামড়া আনেন। চামড়া কিনতে আসেন ঢাকা, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনার বড় বড় ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিক। তবে মঙ্গলবারের হাটে তারা আসেননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামে কোনো চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। হওয়ার সম্ভাবনাও কম। সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনা বা সমন্বয় করেনি। দামের ক্ষেত্রে চামড়ার ক্যাটাগরিও করা হয়নি। এ কারণে প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা বেশি লোকসানে পড়েছেন।’
এদিকে এক ব্যবসায়ী জানান, মাদরাসাগুলোতে লবণ দেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হলেও তার ব্যবহার নিয়ে কোনো তদারকি ছিল না। সেই কারণে অনেক চামড়া এবারও নষ্ট হয়েছে।