মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)
মা-বাবা তার সন্তানের মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন বুনেন। মাইলস্টোনের ছাত্র তানভীরের মা-বাবাও তাকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনে ছিলেন। প্রথম সন্তান সীমান্তকে হারিয়ে দীর্ঘ দিন চিকিৎসার পর রুবেল মিয়া ও লিপি বেগম দম্পতির কোলজুড়ে আসে তানভীর।
মাইলস্টোন স্কুলের ইংরেজি ভার্সনে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তানভীর ছিল ক্লাসের ফার্স্ট বয়। শিশু শ্রেণি থেকে জীবনে কোনো ক্লাসেই দ্বিতীয় হয়নি এই মেধাবী শিক্ষার্থী। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাচ্ছিল তানভীর।
লেখাপড়ায় ভালো ফলাফলের পাশাপাশি ড্রয়িংয়ের ছিল পারদর্শী। মাঝে মাঝে বাবাকে ডেকে তার ছবি এঁকে দিত তানভীর। ছোট ভাই তাসফিকের প্রতি ছিল দায়িত্বশীল। একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছোট ভাই তাসফিককে লেখাপড়ায় সহযোগিতা করত সে।
সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অঙ্কুরেই ঝড়ে গেল তানভীরের মা-বাবার সেই স্বপ্ন। একইসাথে শেষ হয় বিশ্বের নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার স্বপ্ন আঁকা তানভীরের জীবন।
নিহত তানভীর হোসেনের দাফন মঙ্গলবার সকাল ১০টায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আন্দিপাড়া গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে।
সন্তান হারানো শয্যাশায়ী তানভীরের মা লিপি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তানভীরের ইচ্ছে ছিল আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করা।
স্কুলজীবনে তানভীরের অর্জিত সকল পুরস্কারের কথা বলে বার বার মুর্চা যাচ্ছিলেন মা। বাবা রুবেল মিয়া যেন শোকে পাথর হয়ে গেছেন। যে স্বপ্ন তিনি বুনে চলছিলেন, একটি ঝড়েই তা তছনছ। ছোট ভাই তাসফিক ভাই ‘বড় ধন’ কথার অর্থ বুঝার আগেই হারিয়ে ফেলল তার প্রিয় ভাইকে। তানভীরের মা-বাবা হয়তো ছোট ছেলে তাসফিককে নিয়ে বুনবেন নতুন স্বপ্ন।