পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে দিবালোকে ফিল্মি স্টাইলে গুলিবর্ষণ ও ভারী অস্ত্রের মহড়া দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে ও দুপুরে উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া ঘাটে বালু মহলের দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।
হলিউড-বলিউড সিনেমার দৃশ্যের মতো এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি স্থানীয়দের মধ্যে ভয়াবহ উদ্বেগ তৈরি করেছে, যার প্রতিবাদে তারা নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
স্থানীয়দের বিবরণ অনুযায়ী, নাটোরের লালপুরের সন্ত্রাসী 'কাকন বাহিনী' নদীপথে এসে হঠাৎ করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। এরপর তারা ঘাটে এসেও নির্বিচারে গুলি চালায় এবং ভারী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফিল্মি কায়দায় মহড়া দেয়। এই বাহিনীর সদস্যরা বালু ব্যবসায়ীদের অফিস ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
অভিযোগ উঠেছে, নদীতে মাছ ধরতে নামলে মাঝিদের লক্ষ্য করেও গুলি চালানো হচ্ছে। এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমে নদীপাড়ের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, অনেকে রাতে নিজেদের বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
প্রকাশ্যে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন বিকেলে ইসলামপাড়া ঘাটেই স্থানীয়রা এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করে নিজেদের নিরাপত্তা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
তাদের অভিযোগ, কাকন বাহিনী লালপুর ও ঈশ্বরদীর বালু মহল নিয়ন্ত্রণ এবং আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, কাকন আওয়ামী লীগ করে এবং গত ১৬ বছর ধরে লালপুর এলাকায় একচেটিয়া বালু নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। বর্তমানে সে লালপুর ও ঈশ্বরদী অঞ্চলের কিছু পলাতক আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের নিয়ে বড় অস্ত্রের বাহিনী তৈরি করে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে, যেন পুলিশ তাদের কাছে কিছুই না।
এদিকে ঘটনার পরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের সমন্বয়ে একটি যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তারা অভিযুক্তদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নুর বলেন, ‘বালু মহল নিয়ে গত দু’দিন ধরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আগের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং সেটির তদন্ত চলছে। আজকেও আবার দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আমরা যৌথ অভিযানে এসেছি। ঘটনা কেন ঘটছে, কারা ঘটিয়েছে, আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তবে, এই বিষয়ে অভিযুক্ত কাকনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।