নীলফামারীর সৈয়দপুরে আমন ধান কেটেই আগাম আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। প্রখর রোদ ও তীব্র তাপ উপেক্ষা করে জমি তৈরি ও আলুবীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। শীতের আগেই এ আলু তুলে বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলে জানান আবাদকারীরা। এতে বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা তাদের। তবে ভালো ফলন নির্ভর করছে অনুকূল আবহাওয়ার উপর।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের নাপিতপাড়া এলাকায় সপরিবারে আলুবীজ রোপণ করছেন কৃষক রঘুনাথ। তিনি নিজে সুতলি দিয়ে সারি করে দাগ কেটে দিচ্ছেন। আর তার স্ত্রী ও দুই ছেলে সেই দাগের উপর দিয়ে সেভেন স্টার জাতের গোটা আলুবীজ ফেলে যাচ্ছেন। পরে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার কাজ সারছেন দু’জন শ্রমিক।
আলুচাষি রঘুনাথ জানান, এখানে ২৮ শতক জমিতে আলু চাষ করছেন। এতে জমি তৈরি, সার ও বীজসহ প্রায় ১৬ হাজার টাকা ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে। সামনে ফসলের সঠিক পরিচর্যার জন্য শ্রমিকের মজুরি, সেচ, সার ও কীটনাশক বাবদ আরো প্রায় পাঁচ-আট হাজার টাকা খরচ হবে। তারপর ৫০-৬০ দিনের মধ্যে আলু তোলার জন্য উপযোগী হবে।
তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছি। এতে নূন্যতম ৩০-৩৫ হাজার টাকার আলু বিক্রি করতে পারব বলে মনে করছি। ১০ দিন হলো পাশের একটা জমিতে ফুলকপির চারা লাগিয়েছি। আরেকটিতে আগামী সপ্তাহে শশা লাগাব। তবে কৃষি অফিস থেকে বীজ বা সার সহযোগিতা পাইনি। এমনকি সময়মত পরামর্শও পাই না। কারণ তারা আমাদের খোঁজ-খবর নিতে আসেন না।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, গতবছর সৈয়দপুরে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১০০ হেক্টর জমিতে। এবার এ পরিমাণ প্রায় ২০০-৩০০ হেক্টর বাড়বে। এর মধ্যে আগাম আলু চাষ হবে ২০০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে কৃষকরা আগাম আলু চাষ শুরু করেছেন। তবে ধান কেটে এক-দুই সপ্তাহ জমি শুকানো উচিত। তাতে আলু চাষে বেশি সুবিধা হবে ও ফলন বাড়বে।
কৃষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আলুসহ সব ধরনের ফসল চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে সদা নিয়োজিত। বিশেষ করে সবজি চাষিদের সবসময়ই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত মাঠে গিয়ে সমস্যা সমাধানে কৃষকের পাশে আছেন। এরপরও সারের বেশি দাম বা অন্য কোনো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।