মুন্সীগঞ্জ শহরের বড় বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের সেপটিক ট্যাংকে কাজ করতে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে শহরের খালইস্ট এলাকায় সিঙ্গাপুর প্রবাসী সবুজ কাজীর নির্মাণাধীন ভবনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— শাহীন ইসলাম (২৮), ফিরোজ মিয়া (১৮) ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২৫)। তারা স্থানীয়ভাবে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে কয়েকজন শ্রমিক ওই ভবনের সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা লাগানোসহ অন্য কাজ করছিলেন। দুপুরের দিকে ট্যাংক পরিষ্কার করতে প্রথমে শাহীন ভেতরে নামেন। ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাসে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধারের জন্য ফিরোজ ও ইব্রাহিমও ভেতরে প্রবেশ করলে তারাও অসুস্থ হয়ে আটকা পড়েন।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ট্যাংকের ভেতরের বিষাক্ত গ্যাস অপসারণ করে তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। তবে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল না। এছাড়া সেখানে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ট্যাংকে কাজের আগে অবশ্যই সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতরে মিথেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডসহ বিষাক্ত গ্যাস জমে ছিল। এ ঘটনায় নির্মাণাধীন ভবনের মালিক বা ঠিকাদারের অবহেলা ছিল কি না, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে নির্মাণ শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা জরুরি। প্রায়ই সেপটিক ট্যাংক বা কূপে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
মুন্সীগঞ্জের এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।