ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে

‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বাউফলে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ
বাউফলে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি, পটুয়াখালী -২ আসনে (বাউফল) জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিডিসি মার্কেটে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে গণসংযোগ পূর্বক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী স্বপ্ন দেখে না; জনগণই জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। জনগণ চায় আগামীর নতুন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে গড়ে তুলতে। কারণ জনগণ বিশ্বাস করে জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি নাই, সন্ত্রাস নাই, চাঁদাবাজ নাই। জামায়াতে ইসলামী চায় জনগণের প্রত্যাশিত দুর্নীতমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত একটি বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন করতে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে তিনটি দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেছে। প্রত্যেকেই দুর্নীতি, লুটপাট, দলীয়করণ করে দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান দল এখন দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনের কথা বলে জাতিকে ধোঁকা দিতে চাচ্ছে। তারা আবারো ক্ষমতায় বসতে পারলে দেশকে দেউলিয়া করবে। দেশ যখন দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান তখনও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ দুজনে তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ এক পয়সার দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামীই একমাত্র দুর্নীতিমুক্ত দল।’

জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘বিচার ও সংস্কার ব্যতীত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আশা করা যায় না। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের নির্বাচনের আগেই বিচারের আওতায় না আনলে তারা দুর্নীতি-চাঁদাবাজির কালো টাকার ছড়াছড়ি করে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে ওঠা দল শেখ হাসিনার মতোই দিনের ভোট রাতে করতে চেষ্টা করছে। জুলাই যোদ্ধারা এবং দেশপ্রেমিক জনতা হাসিনা মার্কা কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেবে না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য শুধু বাউফলে নয় পুরো বাংলাদেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের আগেই আমাদের প্রতিদ্বন্ধিরা আওয়ামী লীগের মতো আমাদেরকে বাংলা ছাড়ার, বাউফল ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, অতীতে যারা আমাদেরকে বাংলা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে তারাই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আজও যারা আমাদেরকে বাংলা ছাড়ার, বাউফল ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে বা দেবে সময়ের ব্যবধানে তারাই দেশ ছেড়ে পালাবে। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী কখনোই পালাইনি, পালাবেও না। বরং জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে জাতি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। জাতি চায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি বৈষম্যহীন সুখি-সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ড. মাসুদ বলেন, ‘অতীতে যারা ক্ষমতায় বসে কেউ দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে, কেউ লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে বেগম পাড়া গড়ে তুলেছে। এসব দলের দ্বারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। তবেই দেশের মানুষ একটি সুখি-সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ পাবে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী পুরো জাতি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর যেই আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, সেই আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষায় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করা অন্তর্বর্তী সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে।’

তাই তিনি ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করার ৫ দফা দাবি পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

পথসভা শেষে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ নওমালা ইউনিয়নের বিডিসি মার্কেটে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে গণসংযোগ। এসময় তার সাথে বাউফল উপজেলা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ড. মাসুদের আগমণে স্থানীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা দেখা যায়।