বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণায় হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে বিভিন্ন হল ছাড়তে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। যদিও, ছাত্র হলগুলো থেকে খুব বেশি শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগ করতে দেখা যায়নি। তবে ক্যাম্পাসে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
এই অবস্থার মধ্যে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জুলাই ৩৬ হলের শিক্ষার্থী তাসফিয়া আফরিন বাড়ির উদ্দেশে হল থেকে বের হন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হব।’
প্রশাসনের উপস্থিতিতে এমন হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা খুবই হতাশ ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের মিলে কম্বাইন্ড ডিগ্রি, হামলার ঘটনায় প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগ, ভিসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া ও হামলার সাথে জড়িত শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বেশ কিছুদিন ধরে ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক চলছিল। দুপুরে পর কম্বাইন্ড ডিগ্রির পাশাপাশি ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের আলাদা ডিগ্রি চালু রাখার সিদ্ধান্ত জানালে আন্দোলনরত দু’অনুষদের ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিলনায়তনে তালা দিলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ভিসিসহ দুই শতাধিক শিক্ষক।
একপর্যায়ে সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে ব্যর্থ হন। সাড়ে ৭ টার দিকে হঠাৎ বহিরাগত একদল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর। এতে সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এ ঘটনার জেরে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাস। উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে রাতেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।