নরসিংদীতে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৫ জন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে এ ভূকম্পনের উৎপত্তি হয়। এ সময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে মানুষের ঘর দরজা দালান কোঠা কেঁপে ওঠে। লোকজনকে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
প্রায় ৬-৭ সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূমিকম্পে নরসিংদীর সদরের গাবতলী এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে পড়ে তিনজন আহত হন। এদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন (৩৭) ও তার শিশুপুত্র ওমর ফারুক (৮) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক।
এদিকে ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে পলাশ উপজেলার মালিতা গ্রামের বৃদ্ধ কাজম আলী ভূইয়া (৭০) নিহত হয়েছেন, একই উপজেলার ডাঙ্গা গ্রামের নাসির উদ্দিন (৫০) ভূমিকম্পের সময় বিল্ডিং থেকে দৌড়ে বের হতে গিয়ে স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন।
এছাড়া শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইয়াছমিন জানান, তার উপজেলার আছকিতলা গ্রামের ফোরকান মিয়া (৪০) গাছের ডাল কাটার সময় হঠাৎ ভূমিকম্পে গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় প্রেরণ করেন। ঢাকা নেয়ার পথে ফোরকান মিয়া মারা যান।
ভূমিকম্পে নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলায় প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: মেনহাজুল আলম নরসিংদী সদর হাসপাতালে আহতের দেখতে আসেন এবং তাদের সু-চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
আহতের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ৫৭ জন এবং নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সদর ও জেলা হাসপাতাল থেকে ২ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ওমর ফারুক ও কাজম আলী ভূইয়া ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
গুরুতর আহতরা হলেন- তাসপিয়া (১৮), শামীম (২০), রাকিব (২৪), আতিকুর (৭), ওমর (১০), সাইফুল (৩৬), মেহেরউন (২০), আবির (৬), নাসরিন (৩৭), ইয়ামিন (২২), মিথিলা (২০), তামিম (৬), হনুফা (৪০), বিল্লাল (৫০), জাকির (৩৫), মান্নান (১৬), ইমানুল (১৯) প্রমুখ।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিলো ৫ দশমিক ৭ মাত্রার।
অপরদিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভূমিকম্পের কারণে কয়েকটি ভবনে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং কেন্দ্রের বেশকিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর পুরাতন রেল ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে।



