নোয়াখালীতে মাটি বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে যুবলীগ কর্মী নিহত, আটক ২

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

Location :

Sonaimuri
যুবলীগ কর্মী নিহত
যুবলীগ কর্মী নিহত |নয়া দিগন্ত

ফজলুল হক, সোনাইমুড়ি (নোয়াখালী)

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মাটি বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গণপিটুনিতেতে মামলার আসামি জাকির হোসেন (৪০) নামে এক যুবলীগকর্মী নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাকির সোনাইমুড়ী উপজেলা ৮ নম্বর সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দুর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয়কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাকির আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে প্রভাবশালী যুবলীগকর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। তাবলীগ থেকে এসে মুখে দাঁড়ি রেখে কয়েক মাস আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন।

এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। জাকির প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করে এক হাজার ২০০ টাকা। একই এলাকার ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০ থেকে ১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন এক হাজার ৬০০ টাকা। এ নিয়ে গত আট থেকে ১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সাথে তার বিরোধ তুমুল আকার ধারণ করে। এ নিয়ে গত দু’দিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন জ্বালিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সোমবার দুপুরের দিকে মাটির দাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেখান থেকে পাঁচজন ব্যক্তি সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে লাশ পাশের বেগমগঞ্জ উপজেলার পোলোয়ান পোল এলাকায় নিয়ে যায়। পরে খাল পাড়ে সিএনজি থেকে লাশ ফেলে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে দু’জনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।

নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির লোকজন তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। বিএনপির বাবু নামে একজনকে স্থানীয়রা আটক করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি আমার স্বামী মারা গেছে।

জানতে চাইলে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, বিএনপি কোনো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে না।

বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশ রেখে পালানোর সময় স্থানীয়রা দু’জনকে আটক করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করে। লাশ একই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, জাকির একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় ডাকাতি, নারী শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে।