পানি বৃদ্ধিতে ধসে গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার অংশ। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে সেতু ও রংপুর-লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে পানি। গত তিন দিন থেকে ওঠা-নামা করছে তিস্তার পানি।
প্রবল স্রোতের তোড়ে গঙ্গাচড়ার মহিপুরে এলজিইডি নির্মিত তিস্তা দ্বিতীয় সড়কটির উত্তরপ্রান্তের পশ্চিমে সেতু রক্ষা বাঁধের ওই অংশ ধসে যায়। এতে পানি আছড়ে পড়েছে আশপাশের এলাকায়। তিস্তার ওই অংশে কয়েক শ’ মানুষের বসবাস। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে রংপুর-লালমনিরহাট সড়কের যেকোনো অংশ ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
লক্ষিটারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমরা দু’মাস থেকে বলে আসছি। কিন্তু তারা কোনোভাবেই আমাদের কথা শুনছে না। পানি বেশি হলে বাড়িঘরও ভেসে যাবে।’
লক্ষিটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘কয়েক মাস আগে বাঁধের ব্লক ধসে গেলে বারবার বলা সত্বেও এলজিইডি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সে কারণে এই পরিণতি হয়েছে। আশপাশের আমনের ক্ষেতসহ সকল জমিজমা ভেঙে যাচ্ছে। সেতুও হুমকির মুখে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহসুদ হাসান মৃধা বলেন, ‘তিস্তা দ্বিতীয় সেতু রক্ষা করার যে বাঁধ আছে সেটির প্রায় ৬০ মিটার অংশ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ধ্বসে গেছে। সেতু এবং বাঁধটি এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত হওয়ায় তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগেই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল। এলজিইডি জানিয়েছে, তাদের নিজস্ব রিসোর্স দিয়ে তারা মেরামতের কাজ শুরু করবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু মুসা।
তিনি বলেন, ‘এখন পানি বেশি। পানি কমলে ওখানে যদি জিও ব্যাগের প্রয়োজন হয় তাহলে সেটার ব্যবস্থা করব। এর মধ্যেই আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে মিটিং করেছি। বাঁধটি রক্ষায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।’
২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজইিড) ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে গঙ্গাচড়ার মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু নির্মাণ করে।