নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা এবং সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করায় পিরোজপুরের নেছারাবাদে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে। এ ঘটনায় উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরা খালের ওপর সেতুটি ভেঙ্গে ফেলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার পূর্ব জলাবাড়ি খৃষ্টান পাড়া হতে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর একটি প্যাকেজে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএলকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। যার চুক্তি মূল্য ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিজ দুইটি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিরাজুল ইসলাম নিজে কাজ না করে একজন সাব কন্ট্রাক্টরকে দিয়ে কাজ করাচ্ছিলেন। তবে কাজের নিম্নমান এবং সিডিউল মেনে না করার কারণে স্থানীয়রা কাজে বাধা দেন। পরবর্তীতে আরেক সাব কন্ট্রাক্টর গত বছরের শেষ দিকে গার্ডার ছাড়াই সেতুটির ছাদ ঢালাই দেয়। তবে এর কিছুদিন পরে ঢালাই দেয়া অংশে ত্রুটি দেখা দেয়। তখন স্থানীয়দের আপত্তির মুখে এলজিইডি তদন্ত করে সেতুটির ঢালাই দেয়া অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই অনুযায়ী গত সোমবার সেতুটির ত্রুটিপূর্ণ অংশটির অপসারণ শুরু করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেতু নির্মাণে অকল্পনীয় দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আশিকুল মন্ডল জানান, ব্রিজটির কাজ শুরুর প্রথম দিকেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে শুরু করে যার কারণে আমরা বাধা প্রধান করি।
অন্য এক এলাকার বাসিন্দা ওমর হোসেন জানান, আমাদের জালাবাড়ি সেতু নির্মাণের ধীর গতি থাকায় আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে মাদরাসায় যেতে আনেক কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো: রায়সুল ইসলাম জানান, কাজ নিয়ম অনুযায়ী না করার কারণে পুরো স্লাব (ছাদ) ভেঙ্গে নতুনভাবে নির্মাণ কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না যাওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।’
পিরোজপুর এলজিইডি থেকে কাজ না করেই কয়েক হাজার কোটি আত্মসাৎ করে মিরাজুল ইসলাম এবং তার সহযোগিরা। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছে মিরাজুল।



