জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা‘ছুম বলেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে আন্দোলনের প্রত্যাশা বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন এ সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এইটা আমাদের মূল দাবি। সনদ স্বাক্ষরের পর যদি এটা এভাবে পড়ে থাকে তাহলে তার দুই পয়সার মূল্য নেই। আইনি ভিত্তির জন্য সংবিধানের চেয়েও শক্তিশালী ম্যাগনেট হচ্ছে গণভোট। এছাড়া পিআর পদ্ধতি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। বিগত সনাতনী পদ্ধতি এ দেশের কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি।’
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আল আমিন অ্যাকাডেমির মাঠে অনুষ্ঠিত রোকন সম্মেলন-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ টি এম মা‘ছুম বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে সমাজের শিক্ষিত, মার্জিত ও যোগ্য ব্যক্তিরা নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাবেন। এতে করে ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোও ন্যায্যভাবে মূল্যায়িত হবে এবং তাদের মতামত জাতীয় রাজনীতিতে প্রতিফলিত হবো। এ ব্যবস্থায় নির্বাচনের দিন দলীয় আধিপত্য, কালো টাকার প্রভাব, কেন্দ্র দখল ও মারামারি এসব অন্যায় কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটবে। পিআর পদ্ধতি একটি নিরপেক্ষ, গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিক নিজের পছন্দের দল বা প্রার্থীকেই ভোট দিতে পারবেন। এতে ভোটারদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা গত পঞ্চাশ বছর ধরে ভোট ডাকাতি করে ও জনগণের আমানতের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে সংসদ সদস্য হয়েছেন তারাই এখন এ পদ্ধতির বিরোধিতা করছেন। আসলে তারা পিআর পদ্ধতি বুঝেন না তা নয়, তারা ভালো করেই বোঝেন। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে না বোঝার ভান করেন। কিন্তু জনগণ ঠিকই বোঝে আমরা এ পদ্ধতির মাধ্যমে এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই যার মাধ্যমে দেশে প্রকৃত বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এ পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি ও একদলীয় আধিপত্য চিরতরে দূর করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ পদ্ধতি কোনো জটিল বিষয় নয়। এটি নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যকর করা সম্ভব। সাধারণ ভোটারদের ওপর কোনো বাড়তি বোঝা চাপবে না। আগের মতোই তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের দল বা প্রার্থীকে ভোট দেবেন। পার্থক্য শুধু এতটুকু এবার ভোটের মূল্য ও ফলাফল সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সব দল ও সব মানুষ মিলেমিশে দেশটাকে গঠন করবে। এ ব্যবস্থাই পারে বাংলাদেশকে একটি সুশাসনভিত্তিক, অংশগ্রহণমূলক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে।’
কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বিল্লাল হোসাইন মিয়াজীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চল টিম সদস্য কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মাসুদুল ইসলামীর বুলবুল।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, হারুনুর রশীদ। দারসুল কোরআন পেশ করেন মুহাদ্দিস আবু নছর আশ্রাফী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর শহর আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান, সদর আমির মাওলানা আফসার উদ্দিন।



