মাদরাসা বোর্ড চেয়ারম্যান

মাদরাসার সার্টিফিকেটের কারণে চাকরি হয়নি

বাবা-মা আলেম তৈরির উদ্দেশ্যে বাচ্চাদেরকে মাদরাাসায় ভর্তি করায়। পড়তে থাকে, আস্তে আস্তে বড় হয়। নাইন-টেনে যখন ওঠে, তখন দেখে যে সিনিয়ররা রাস্তায় ঘুরছে। ভালো রেজাল্ট থাকা সত্বেও ভালো চাকরি পাচ্ছে না। বিগত সময়ে পুলিশসহ কোনো ডিফেন্সে চাকরি হয়নি মাদরাসার ছেলেদের।

তাজমুল জায়িম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

Location :

Kushtia
ইবিতে মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক
ইবিতে মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্য দেন মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিঞা মোঃ নুরুল হক বলেছেন, পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে আমাদের সন্তানেরা যখন কোনো চাকরির ক্ষেত্রে গিয়েছে, তখন মাদরাসার সার্টিফিকেট দেখে তাদেরকে টার্মিনেট করা হয়েছে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইআর) এর আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল একাডেমিক ভবনের গগণ-হরকরা গ্যালারিতে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘বাবা-মা আলেম তৈরির উদ্দেশ্যে বাচ্চাদেরকে মাদরাাসায় ভর্তি করায়। পড়তে থাকে, আস্তে আস্তে বড় হয়। নাইন-টেনে যখন ওঠে, তখন দেখে যে সিনিয়ররা রাস্তায় ঘুরছে। ভালো রেজাল্ট থাকা সত্বেও ভালো চাকরি পাচ্ছে না। বিগত সময়ে পুলিশসহ কোনো ডিফেন্সে চাকরি হয়নি মাদরাসার ছেলেদের।’

তিনি আরো বলেন, “এই যে পারসেপশন তৈরি হয়েছে, তাদের আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করা হয়েছে। তখন এই দাখিল পাস করার পরে আর একটা দৌড় দেয় কলেজের দিকে, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার শিক্ষার্থী, আর আলিম পরীক্ষা দিয়েছে শুধুমাত্র ৮৬ হাজার প্লাস। ২ লাখ ৮ হাজার ছাত্র কোথায় গেল? সবাই তো আর ঝরে পড়ে নাই, কলেজে চলে গেছে। এই যে ৮৬ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিলো আলিম, এদেরকে আর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা যাবে না মাদরাসায়। চলে যায় বিভিন্ন জায়গায়।”

অনুষ্ঠানে আইআইইআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।

সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন বিএমটিটিআই এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদুল হক ও ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলী। এছাড়া প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ.ছ.ম তরীকুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘এখন আলিয়া মাদরাসা দুটি ধারায় বিভক্ত। একটা বোর্ডের আওতায় যা মাদরাসা শিক্ষার অংশ, আরেকটি ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এই দুটি অংশকে এগিয়ে নিতে হবে। মাদারাসা শিক্ষার উন্নয়নের জন্য আমাদের সবাইকে প্রায়োগিক পরিকল্পনা করতে হবে।”