দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ২য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ঘিরে একের পর এক বিতর্কে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। দাওয়াত কার্ড বিতরণ থেকে শুরু করে সমাবর্তনে অতিথি নির্বাচন—সবকিছু নিয়েই শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচিকে সমাবর্তনের দাওয়াত কার্ড দেয়ার ছবি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচনা শুরু হয়।
ছবিতে দেখা যায়, বখতিয়ার আহমেদ কচিকে দাওয়াত কার্ড দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় ইউট্যাব’র সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ফারুক হাসান, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মহিদুল হাসান ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মামুনার রশীদ। রাজনৈতিক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানোকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্বাচন করা নিয়েও শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তাদের অনেকেই মনে করছেন, একজন রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তা হিসেবে তার উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়া তার রাজনৈতিক দলের হয়ে এমপি নির্বাচন করা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সমাবর্তন একটি অ্যাকাডেমিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখানে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকা অনুচিত।’
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব গবেষক ও শিক্ষাবিদ কিংবা সমাজে অবদান রাখা ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে কেন এমন একজন বক্তাকে নির্বাচন করা হলো?’
অর্থনীতি বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন ইসলাম লেখেন, ‘ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক এত সংগঠন থাকা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানের ইনভাইটেশন কার্ড উদ্বোধন হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বাসায়। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলো কতটা অসহায় এখানেই তার প্রমাণ হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শেখ রিয়াদ প্রশাসনকে হুঁশিয়ার দিয়ে বলেন, ‘প্রশাসন হলো দলকানা ও মেরুদণ্ডহীন। কনভোকেশন নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যা শিক্ষাঙ্গণের মর্যাদা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখে।’
উল্লেখ্য, সমাবর্তনের দাওয়াত কার্ড বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির দিনাজপুর জেলার নেতৃত্ববৃন্দের মাঝে দেয়া হয়।



