অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশে কোনো ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না

‘জামায়ত ক্ষমতায় গেলে কাউকে হয়রানি করা হবে না, ধর্ম নিয়ে কাউকে জোর করা হবে না। মানলে আপনি ধর্ম মানবেন আর না মানলে মানবেন না সেটা আপনার ব্যপার। ধর্ম মানতে কাউকে বাধ্য করা হবে না।’

মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা

Location :

Muktagachha
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ময়মনসিংহ-৫ মুক্তাগাছা আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশে কোনো ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না। কারণ প্রত্যেক উপজেলা ভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে তাদের টাকা দেয়া হবে তারপরও কোনো ভিক্ষাবৃত্তি থাকবে না।’

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের শ্রীপুর পুরাতন বাজার স্কুল মাঠে আগস্ট-জুলাই অভ্যুত্থানে শাহাদতবরণকারী মুক্তাগাছার সন্তান শহীদ ছামিদসহ অন্য শহীদ, আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রাধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘জনগণের দেয়া সমস্ত ট্যাক্স রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা হবে। সেই টাকা মানবতার কল্যাণে ব্যয় হবে। শতভাগ টাকার কাজ হবে, কোনো টাকা আত্মসাত করা হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে হলে ইসলাম ছাড়া কোন পথ নাই। ৫৪ বছর তো দেখলাম, সাড়ে ২৩ বছর আওয়ামী লীগ, ১৪ বছর বিএনপি, নয় বছর জাতীয়পার্টি তিন দল দেখা শেষ।’

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘এইবার একটু জামায়াতকে দেখেন, আমরা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় গিয়ে দেখাতে চাই রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, চালাতে হয়। জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে সবাই ধনশালী, বিত্তশালী হয়ে যায়। ইসলামী রাষ্ট্র হলে কোনো এমপি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান, ওসি, ডিসি, এসপি কেউ একটি টাকাও মারতে পারবে না। জামায়াতের প্রত্যেকটি এমপি, মন্ত্রীর কাছ থেকে টাকার হিসাব পাই টু পাই করে নেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত বিএনপি সরকারের আমলে জামায়াতে ইসলামীর মাত্র দুইজন মন্ত্রী ছিল। সারা দুনিয়া থেকে লোক এসেছিল তদন্ত করার জন্য তাদের মন্ত্রণালয়ে একটি টাকার দুর্নীতি ধরতে পারে নাই। আমরা বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামীর হাতে যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়, নিজামী সাহেব, মুজাহিদ সাহেব যেভাবে মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন বাংলাদেশের ৩৫টি মন্ত্রণালয় ঠিক সেইভাবে পরিচালিত হবে। কোনো জুলুম হবে না, অর্থ আত্মসাৎ হবে না, মুখ দেখে দেখে বরাদ্দ দেয়া হবে না। যার যা প্রাপ্য তাই দেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।’

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে ঢেলে সাজানো হবে। থানার ওসিদের ডেকে বলে দেয়া হবে অন্যায় ভাবে মামলা নেয়া যাবে না, অন্যায়ভাবে মামলা দেয়া যাবে না। অন্যায়ভাবে কাউকে জেলে দেয়া যাবে না আবার আসল আসামিকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। টাকা খেয়ে ভাল মানুষকে চোর বানাবেন চোরকে ছেড়ে দেবেন, এই ধরনের ব্যবসা কোন থানার ওসি করতে পারবে না। চলতি বেতনে ওসিদের সংসার না চললে তাদের বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপরও যে সকল ওসি ঘুষ খাবে প্রকাশ্যে তাদের বিচার করা হবে।’

সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জামায়ত ক্ষমতায় গেলে কাউকে হয়রানি করা হবে না, ধর্ম নিয়ে কাউকে জোর করা হবে না। মানলে আপনি ধর্ম মানবেন আর না মানলে মানবেন না সেটা আপনার ব্যপার। ধর্ম মানতে কাউকে বাধ্য করা হবে না।’

তিনি জনগণকে আহ্বান করে বলেন, জামায়াতের পক্ষে যিনিই প্রার্থী হবেন তাকে দাড়িপাল্লা মার্কায় ভোটের আহ্বান জানান।

মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ড আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ ছামিদের পিতা মো: ফরহাদ মিয়ার সভপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি ও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তাগাছা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো: শামছুল হকের সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ মোজাহিদ, পৌর জামায়তের আমির মাওলানা আফতাবুর রহমান আকন্দ, উপজেলা জামায়াতের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ডা: মাওলানা আজহারুল ইসলাম শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা হাবিবুল হক শরীফ, মুক্তাগাছা উপজেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মোস্তফা রায়হান, মানকোন ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।