‘সাদা পাথর লুটপাটে প্রশাসনিক লোকজন ও রাজনৈতিক দলের নেতারা জড়িত’

দেড় থেকে দু’মাস ধরে লুট চলছে বলে সবাই প্রচার করলেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকাই প্রমাণ করে তারা আঁতাত করে এ কাজ করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নেতারাও এ লুটের জন্য ঐক্য গড়ে তুলেছেন।

তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, সুনামগঞ্জ

Location :

Sunamganj
গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়
গণ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় |নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জের নবগঠিত সামাজিক সংগঠন ‘হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন’র যুগ্ম আহ্বায়ক মো: ওবায়দুল হক মিলন বলেছেন, ‘সিলেট ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা সঙ্ঘবদ্ধ ও পরিকল্পিতভাবে লুটপাট করা হয়েছে। এখানে দেড় থেকে দু’মাস ধরে লুট চলছে বলে সবাই প্রচার করলেও প্রশাসনের নিরব ভূমিকাই প্রমাণ করে তারা আঁতাত করে এ কাজ করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের নেতারাও এ লুটের জন্য ঐক্য গড়ে তুলেছেন। তাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতেই লুট হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে আয়োজিত গণ সমাবেশ ও মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল হক মিলন বলেন, ‘যতগুলো সঙ্ঘবদ্ধ দল ছিল তারা সমাজে আলাদা আলাদাভাবে পরিচিত হয়। কিন্তু লুটের ক্ষেত্রে তারা এক টেবিলে বসে লুটের ঘোষণা দেয়। আমরা আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি ও দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার্থে এ সামাজিক আন্দোলন তৈরি করেছি। সারা দেশের প্রাকৃতিক পর্যটকদের সম্ভাবনাময় দর্শনীয় এ স্থানটি আজ বিলীন হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে এতো পাথর কীভাবে লুট হলো তা গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝা যায়। এ অন্যায় কাজে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।‘

হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন রামেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, এ কে এম আবু নাছার, সাংবাদিক পংকজ কান্তি দে, খলিল রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সেনা সদস্য মো: নুরুল হক, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম জমনু, অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর বনিক, জামালগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব তোফায়েল আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার আহমদ উসমান, ছাতক উপজেলার উজ্জীবক সুজন তালুকদার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সিলেটের সাদা পাথর হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্থান। দেশে-বিদেশে এর পরিচিতি অনন্য। সাদা পাথরে যে লুট হয়েছে তা নতুন কিছু নয়, আমরা বলবো সারা দেশেই এ লুট চলছে। সাদা পাথরের লুটপাট হচ্ছে এর একটি উদাহরণ। ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল সেই আকাঙ্ক্ষার দায়ে আমরা হতাশ ও বিস্মিত হয়েছি। আমরা হতাশ হয়েছি এ লুটের সাথে রাজনৈতিক যে ঐক্য সেটার জন্য। আমরা লক্ষ্য করছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীও এ লুটের একটি অংশ। বিভাগীয় কমিশনার এ লুটপাট নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা আরো হতাশ হয়েছি।

তারা আরো বলেন, আমাদের যাদুকাটা নদী, ধোপাজান নদী ও টাঙ্গুয়া হাওর লুট হয়েছে। এর সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু ব্যক্তি যুক্ত, এটা প্রমাণিত হয়েছে। সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনা গণমাধ্যমকর্মীরা তুলে ধরেলেও তার কোনো প্রতিকারের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অবিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।