ব্রাকসু নির্বাচন স্থগিত নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, ভিসি কার্যালয় ঘেরাও

সঠিক তথ্য সরবরাহ করার পরও যদি কোনো ভুল থাকে তাহলে সেটি ঠিক করার দায়িত্ব কমিশনের।

সরকার মাজহারুল মান্নান, রংপুর ব্যুরো

Location :

Rangpur
ভিসি কার্যালয় ঘেরাও।
ভিসি কার্যালয় ঘেরাও। |নয়া দিগন্ত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ও হল ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচন স্থগিতের ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা চলছে ক্যাম্পাসে। এ নিয়ে ছাত্রদলের সাথে ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্রশিবিরের হট্টগোল চলছে। তারা ভিসি অফিস ঘেরাও করে স্থগিতাদেশ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ভোটার তালিকার ভূল সংশোধন ও অন্যান্য অসংগতি দূর হওয়া না পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেয় কমিশন। এ ঘোষণার পর থেকেই পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেয় ছাত্রদল ও ছাত্র সমন্বয়করা।

সাবেক ছাত্র সমন্বয়ক এবং বেরোবি শিক্ষার্থী পরিষদের নেতারা প্রশাসনিক ভবনের চতুর্থ তলায় নির্বাচন অফিসের বাইরে তালা লাগানোর ঘোষণা দেয়। তালা লাগানোর চেষ্টা করলে এর প্রতিবাদ জানায় ছাত্রদল। এ সময় তারা পরস্পর তুমুল হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন।

দেখা যায়, ছাত্র সমন্বয়ক খোকন ও আশিকের তুমুল বিতর্কে জড়ান ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি তুহিন রানাসহ অন্যরা। তারা দু’পক্ষ আঙুল উচিয়ে কথা বলা শুরু করে। এবং পরস্পরের প্রতি তেড়ে আসে। তখন ছাত্রদলের সভাপতি ইয়ামিন ও সাধারণ সম্পাদক জহির রায়হান ছাত্রদলের উত্তেজিত নেতাকর্মীদের থামানোর চেষ্টা করেন। প্রায় ঘন্টাখানেক এ অবস্থানের পর ছাত্র সমন্বয়ক শিক্ষার্থী পরিষদের নেতারা ভিসির অফিস রুমের সামনে বিক্ষোভ করে অবস্থান করেন। তারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রাতের মধ্যেই সামান্য ‍যে ভুলত্রুটি আছে সেগুলো সমাধান করে নির্বাচন চালু রাখার দাবি জানান।

এ সময় সাবেক ছাত্র সমন্বয়ক স্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী শামসুর রহমান সুমন জানান, প্রশাসন ছাত্রদলকে সন্তুষ্ট করতে নাটক বানিয়ে নির্বাচন বানচালের জন্য এ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে। এটা আমরা মানি না। ভোটার তালিকায় সামান্য যে ভুলত্রুটি আছে সেগুলো রাতের মধ্যেই সমাধান করে কাল থেকে প্রক্রিয়া চলমান রাখতে হবে। তা-না হলে তাদের আন্দোলন চলবে।

সাবেক সমন্বয়ক ও বেরোবি শিক্ষার্থী পরিষদের প্রার্থী আহমেদুল আল বীর জানান, এটা প্রশাসনের নতুন তামাশা। শিক্ষার্থীর সাথে নতুন টালবাহনা শুরু করেছে প্রশাসন। রাতেই স্থগিতাদেশ তুলতে হবে। যে ভুল আছে সেটি এক ঘণ্টার মধ্যেই সমাধান সম্ভব।

ছাত্রদল সভাপতি ইয়ামিন জানান, যেহেতু ভোটার তালিকায় ভুল আছে। সে কারণে সেটি সমাধান করেই শীতকালীন ছুটির পরেই নির্বাচন হলে ভালো হয়। যারা আন্দোলন করছে তারা ক্যাম্পাসের ভালো চায় না।

এর আগে সন্ধায় এ স্থগিতের ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশনার ড. মোহসীনা আহসান। কারণ হিসেবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আনেন তিনি। এর মাধ্যমে কমিশনকে হেয় প্রতিপন্ন করার পরিকল্পনা ছিল কিনা সেটিও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মো: শাহজামানসহ অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থগিতের ঘোষণাকে দু:খজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলছেন ভিসি অধ্যাপক শওকাত আলী।

তিনি বলেন, ‘সঠিক তথ্য সরবরাহ করার পরও যদি কোনো ভুল থাকে তাহলে সেটি ঠিক করার দায়িত্বও কমিশনের।’

তিনি কমিশনকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

এ ঘোষণার পর সাধুবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল। আর প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র সমন্বয়ক ও ছাত্র শিবির সমর্থিত বেরোবি শিক্ষার্থী পরিষদ।