পাকুয়াখালি গণহত্যার বিচারের দাবিতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসন ও প্রতি পরিবার থেকে একজনকে সরকারী চাকরি প্রদানের জন্য দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)। জেলার লংগদুতে ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকান্ড দিবসে এ দাবি জানানো হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে (৯ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সকালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা কনফারেন্স কক্ষে শোকসভা, দোয়া ও কবর জিয়ারত অনুষ্ঠিত হয়।
শোকসভায় পিসিসিপি’র নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালি গণহত্যার নির্মম এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আজো বেঁচে আছেন একজন ইউনুস মিয়া। ৩৫ কাঠুরিয়াকে জেএসএস-এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী নৃশংস নির্যাতন করে করে নির্মমভাবে হত্যা করে। মোট ৩৬ পরিবারের মধ্যে ৩৫ জন নিরস্ত্র বাঙালি কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে টুকরো টুকরো করেছিলো সেদিন। একমাত্র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া, তিনি কৌশলে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার বেঁচে ফেরার মাধ্যমে এই নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছিলো।’
পিসিসিপি’র নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘ঘটনার পর বাংলাদেশ সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আজো জনসম্মুখে আসেনি। বেঁচে থাকা ইউনুস মিয়াও একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি নিজে সেই হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন। সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও গত ২৯ বছরে এই নির্মম হত্যাকান্ডের কোনো বিচার হয়নি। বেঁচে ফেরা ইউনুস মিয়াও বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। যে ৩৫ জন কাঠুরিয়া এই নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন, তাদের পরিবার কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি পড়ছে ২৯ বছর ধরে। কারণ দেশের আইন-আদালত কোনো বিচার এনে দিতে পারেনি। তার পরও মাঝেমধ্যে একজন ইউনুস মিয়া স্বপ্ন বাঁধেন যেকোনো একদিন এত জঘন্য একটি হত্যাকান্ডের বিচার করবে সরকার।
আলোচনা সভায় পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি তাজুল ইসলাম’র স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে ও লংগদু উপজেলা পিসিসিপি সভাপতি সুমন তালুকদারের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আসিফ ইকবাল’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি গিয়াস উদ্দীন, পিসিসিপি লংগদু উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ রেজা, এছাড়াও পিসিসিপি’র ইউনিয়ন,উপজেলা ও জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
৩৫ কাঠুরিয়া পরিবারের সদস্যসহ লংগদু উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায়ই তিন (৩) শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জেলা পিসিসিপি সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন ওই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সম্পন্ন করেন।