নিজের ফ্লাটেই নারীসহ গ্রেফতার হন আ’লীগ নেতা ফারুক

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেনের সাথে ওই ফ্লাটে নাসরিনের অবস্থানের বিষয়টি মানতে না পেরে এ তথ্য ফাঁস করে দেয়া হয়, এমনটিই সন্দেহ করা হচ্ছে।

হারুন আনসারী, ফরিদপুর

Location :

Faridpur

ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীতে ডায়বেটিক হাসপাতালের সামনে অবস্থিত নূরজাহান টাওয়ারের দশ তলায় নিজস্ব ফ্লাট থেকে গ্রেফতার হন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবিদার ও যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম মেম্বার ফারুক হোসেন। এ সময় তার সাথে নাসরিন (২৮) নামে এক নারীকেও আটক করা হয়। তাকে কোতোয়ালি থানায় নারীদের কয়েদখানায় আটক রাখা হয়েছে বলে সরেজমিনে গিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

এ সময় নাসরিনকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে পরিচয় দেন ফারুক। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাসরিন শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত শ্রমিক লীগ নেতা ফিরোজ শেখের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে।

পুলিশ জানায়, নূরজাহান টাওয়ারে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেনের মালিকানাধীন চারটি ফ্লাট রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ভাড়া দেয়া। অপর একটি তিনি নিজে ব্যবহার করেন।

৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যাওয়া ফারুক হোসেন গ্রেফতারের আগে ঠিক কবে থেকে ওই ফ্লাটে অবস্থান নেন তা জানা যায়নি।

গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে ফারুক হোসেন জানান, শেখ হাসিনা তাকে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দ্বায়িত্ব দিয়েছেন।

আমেরিকা প্রবাসী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের অনুপস্থিতিতে ফারুক হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়ে তার অনুগতরা শুভেচ্ছাও জানান।

১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণার দিনে নিষিদ্ধ কার্যক্রম ঘোষিত আওয়ামী লীগকে ফারুক হোসেন ফরিদপুর জেলায় পুনর্বাসন করছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেনের সাথে ওই ফ্লাটে নাসরিনের অবস্থানের বিষয়টি মানতে না পেরে এ তথ্য ফাঁস করে দেয়া হয়, এমনটিই সন্দেহ করা হচ্ছে।

এদিকে, এসব বিষয়ে জানতে সরেজমিনে কোতোয়ালি থানায় গিয়েও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। থানার ভেতরে প্রবেশের কলাপসিবল গেটটিও তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্ধ করে রাখতে দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের কাছে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য বলা হলে তারা বলেন, একটু অপেক্ষা করুন। এসপি স্যার আসছেন। তবে এরপর আধা ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কারো সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের একটি দল শহরের পূর্ব খাবাসপুর ও দক্ষিণ ঝিলটুলীতে আরো কয়েকজনকে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে।

এদিকে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, শহরের মধ্যবর্তী এমন একটি ব্যস্ততম এলাকায় কিভাবে কাদের আশ্রয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন আশ্রয় নিয়েছিলেন, সে বিষয়টি প্রেস ব্রিফিং করে জানান। ফরিদপুরে বিভিন্ন উপায়ে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পায়তারা চালানো হচ্ছে। বিষয়টিকে কোনোভাবেই হালকা করে দেখার উপায় নেই।