জামালপুরে ফুটপাত ও সড়কে দোকান, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

‘শুধু উচ্ছেদ অভিযান দিয়ে হবে না, আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আমরা এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান বের করার চেষ্টা করছি।’

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা

Location :

Jamalpur
সড়ক ও ফুটপাতে বাজার
সড়ক ও ফুটপাতে বাজার |নয়া দিগন্ত

জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার ব্যস্ততম এলাকা বাসস্ট্যান্ড ও মধ্যেবাজারের প্রধান সড়ক ও ফুটপাতগুলো অবৈধভাবে দখল করে বসানো হয়েছে দোকানপাট। যত্রতত্র দোকানপাট এবং যানবাহনের বিশৃঙ্খল পার্কিংয়ের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বছরের পর বছর এ রকম চললেও এগুলো যেন দেখার যেন কেউ নেই। অবৈধভাবে ফুটপাত দখলে থাকায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারী। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনেও একই চিত্র দেখা যায়। এতে শিক্ষার্থীদের দিনের পর দিন ভোগান্তি বাড়ছে।

জামালপুর-বকশীগঞ্জ এবং বকশীগঞ্জ-রৌমারী আঞ্চলিক মহাসড়কের অংশবিশেষসহ পৌরসভার ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যেমন পুরাতন বাসস্ট্যান্ড বটতলা মোড় থেকে মধ্য বাজার রোড, উত্তর বাজার থেকে দক্ষিণ বাজার মোড়, মধ্য বাজার মোড়, বড় মসজিদ রোড ও পুরাতন গরুহাটি রোডের ফুটপাত ও সড়কের সিংহভাগই অবৈধ দখলে চলে গেছে। ফলমূল, প্লাস্টিকের মালামাল, কাঁচাবাজার ও মাছের বাজারের পসরা সাজিয়ে বিক্রেতারা ফুটপাতের একটি বড় অংশ দখল করে রেখেছেন।

অপরদিকে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে রাস্তাগুলো এমনিতেই সরু। তার ওপর এই অবৈধ দখলের ফলে যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা, যা সময় নষ্টের পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বকশীগঞ্জ উলফাতুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনেও মাছের বাজার ও সিএনজি স্টেশনের ফুটপাত দখল করে রেখেছে।

সরকারি গার্সস্কুলের এক শিক্ষার্থী জানান, স্কুলের সামনে মাছের আঁশটে ও পচা গন্ধে নিশ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে যায় এবং যানজটের কারণে তাদের স্কুলে যাতায়াত করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, অটোরিকশার যত্রতত্র পার্কিং এবং ফুটপাত দখলের কারণে পথচারীদের চলাচল রীতিমতো কষ্টে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু মার্কেটের মালিক টাকার বিনিময়ে ফুটপাত ও সড়কের ওপর অবৈধ দোকানপাট বসানোর সুযোগ করে দিচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা মাসিক মিটিংয়ে এই বিষয়টি একাধিকবার আলোচনা হলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান চালালেও, অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই দখলদাররা পুনরায় ফুটপাত দখল করে তাদের ব্যবসা শুরু করেন।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করার বিষয়টি আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু অভিযান শেষ হতে না হতেই পরিস্থিতি আবার আগের মতো হয়ে যায়। এটি একটি চক্রের মতো কাজ করছে। শুধু উচ্ছেদ অভিযান দিয়ে হবে না, আমাদের সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আমরা এই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান বের করার চেষ্টা করছি, যাতে পৌরবাসী নির্বিঘ্নে যানজটমুক্ত চলাচল করতে পারে।’

বকশীগঞ্জ উপজেলার সচেতন মহল এই পরিস্থিতির একটি স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, বকশীগঞ্জ বাজারের ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। পৌরসভা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে উচ্ছেদের পর আর যাতে দখল না হয় সে হিসাবে কাজ করতে হবে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণও এই দীর্ঘদিনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুততম সময়ে ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।