গৌরনদীতে চোখের চিকিৎসায় আশার আলো ভাষা সৈনিক ফাউন্ডেশন

এ সময় মোট ২৬২ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। এর মধ্যে ৬৯ জনের ছানি অপারেশন, আট জনের নেত্রনালী অপারেশন এবং ১৮৫ জনকে বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ দেয়া হয়।

আরিফিন রিয়াদ, গৌরনদী (বরিশাল)

Location :

Gaurnadi
ভাষা সৈনিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চিকিৎসা সেবা
ভাষা সৈনিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চিকিৎসা সেবা |নয়া দিগন্ত

বরিশালের গৌরনদীতে হতদরিদ্র মানুষের চোখের চিকিৎসায় নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে ভাষা সৈনিক ফাউন্ডেশন। উপজেলার নীলখোলা আসিয়া চ্যারিটেবল কমপ্লেক্সের আঙিনায় রোববার সকাল থেকে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কারো হাতে পুরনো প্রেসক্রিপশন, কারো চোখে উদ্বেগ, আবার কেউ এসেছে ছানি অপারেশনের আশায় বা শুধু চোখের ব্যথার ওষুধ নিতে। অধিকাংশের মুখে জীবনের কষ্টের ছাপ, মনে একটাই আশা, দূর হবে চোখের অন্ধকার।

ভিড়ের এক পাশে বসে ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব মমতাজ বেগম। তিন বছর আগে চোখে ছানি পড়ে ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আসে তার দৃষ্টি। অর্থাভাবে শহরে গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। রান্নাঘরের হাঁটাহাঁটি থেকে শুরু করে নাতির মুখের হাসি সবই এখন ঝাপসা স্মৃতি। তিনি বলেন, ‘যদি আবার ভালো করে দেখতে পাই, আল্লাহর কাছে আর কিছু চাইব না।’ বিনামূল্যে অপারেশনের সুযোগ পেয়ে যেন নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব ফাউন্ডেশন ও ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত এই দিনব্যাপী বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা ও সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক, গৌরনদী বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহির।

দিনভর ক্যাম্পে ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা: বেনজীর বুশরা চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন। এছাড়া সহায়তায় ছিলেন কাউন্সিলর সিগ্ধা গোলদার, শামীমা ফেরদৌস ও বৃষ্টি মণ্ডল।

এ সময় মোট ২৬২ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। এর মধ্যে ৬৯ জনের ছানি অপারেশন, আট জনের নেত্রনালী অপারেশন এবং ১৮৫ জনকে বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ দেয়া হয়। যাদের অপারেশনের প্রয়োজন, তাদের বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে সম্পূর্ণ ফাউন্ডেশনের খরচে অপারেশনের ব্যবস্থা করা হবে।

সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহির জানান, এ সেবা কার্যক্রম কেবল এক দিনের নয়, প্রতি তিন মাস পর একই স্থানে নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হয়। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রয়েছে।