কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার জাফরাবাদ ও ভবানীপুর গ্রামে আজও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। বর্ষাকালে গ্রাম দু’টি বদ্বীপে পরিণত হয়। তখন হাজারো গ্রামবাসীর একমাত্র ভরসা হয়ে উঠে ডিঙ্গি নৌকা। যোগাযোগ বাড়াতে এলাকাবাসী সেতু নির্মাণের দাবি তুলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত সরকারি খরচে তেমন কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি এই গ্রামে। নদী ভাঙন রোধেও কখনো সরকারি-বেসরকারি কোনো ধরণের উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কোনো স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। গ্রাম দুটিতে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও নেই।
যোগাযোগ সুবিধাবঞ্চিত এই গ্রামের মানুষ যোগাযোগ বাড়াতে সেতু নির্মাণের দাবি তুলেছেন। যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে অনেকেই পৈত্রিক ভিটেবাড়ি ছেড়ে অন্য গ্রামে চলে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা সেতু নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর দুঃখ ঘুচবে।
জাফরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা হৃদয় মাহামুদ বলেন, ’২০২৪ সালের এইচএসসি পরিক্ষার সময়ে নৌকা না পেয়ে সাতরে নদী পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীকেই এমন ঘটনার শিকার হতে হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, ’স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও, এই গ্রামে আজও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি।’
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা চয়ন মাহমুদ দিদার জানান, যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে এই গ্রামে একাধিক রোগীকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কারার আহমেদ আলী বলেন, ’নির্বাচন এলে অনেকেই এসে বলেন সেতু করে দিবে। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে আর আসে না! মৃত্যুর আগে সেতু দেখে গেলে শান্তি পেতাম।’
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নিকলী উপজেলা ইউনিটের সদস্য সচিব মাশুকুর রহমান ঝুটন বলেন, ছোট বেলা নৌকা যোগে জাফরাবাদ যাইতাম। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এই গ্রামে কোনো রাস্তা হয়নি।
নিকলী সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আল মামুন বলেন, ’গ্রামবাসীদের নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে চলেছি। সাইটধার অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কৃষি জমি জাফরাবাদ হাওরে। সাইটধার হতে জাফরাবাদ সেতুটি নির্মাণ হলে, কৃষির সাথে জড়িতসহ স্থানীয়দের উপকার হতো।’
নিকলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, একটি সেতু গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হবে।