পটুয়াখালীর দশমিনায় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় ছেলে ফাহিম আহম্মেদ বয়াতি (১৮) নিহত হয়েছেন। এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বাবা মো: জাকির হোসেন বয়াতি (৪৩)।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে দশমিনা উপজলার বেতাগি সানকিপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধলুফকির বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় গুরুতর অবস্থায় জাকির হোসেনকে বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ফাহিম ও আহত জাকির বয়াতির বাড়ি এবং হামলাকারীদের বাড়ি বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের ভাংরা গ্রামে। হামলার সময় স্থানীয় লোকজন অভিযুক্ত সোহাগ মীরের বাবা সানু মীরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহিম মৃধা বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জেরে একই এলাকার সানু মীর ও তার ছেলে সোহাগ মীরসহ ১০ থেকে ১২ জন কিশোর-যুবক প্রথম ফাহিমকে মারধর করে এবং পরে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ফাহিমের বাবা জাকির হোসন ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকায় থাকার সময় সোহাগ ও ফাহিমের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসাও করে দেন। তবে সোহাগ মীর তাতে সন্তুষ্ট ছিল না। এর জেরে ফাহিম কোরবানির ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাহিম বান্দরবানে কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া করতেন।
ধলুফকির বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী মো: কামাল হোসেন বলেন, ‘১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী এলাকার ১০ থেকে ১২টি ছেলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী জাকির বয়াতি ও তার ছেলে ফাহিম বয়াতিকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। সন্ধ্যার দিক বাবা-ছেলেকে নিয়ে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাহিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা: শাহরিয়ার শুভ সাংবাদিকদের জানান, ‘সন্ধ্যার পর মুমূর্ষু অবস্থায় দু’ব্যক্তিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। এর মধ্যে অল্প বয়সী ছেলেটি মৃত ছিল এবং মধ্যম বয়সী লোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলীম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় লোকজন হামলাকারী সানু মীরকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখে। পরে পুলিশ সানু মীরকে উদ্ধার করে দশমিনা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত সানু মীরের ছেলে ও তাদের সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তাদেরকে ধরতে অভিযান চলছে।