কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি চলায় ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
এর আগে, ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দু’ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এছাড়া আজকের মধ্যে তাদের কাঙ্ক্ষিত দাবি মানা না হলে আগামীকাল ৪ ডিসেম্বর থেকে কমপ্লিট শাট ডাউনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, হাসপাতালটির প্রধান ফটকের সামনে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরাও ঘুরাঘুরি করছেন।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট সাদ্দাম হোসেন ও ই পি আই টেকনোলজিস্ট খছরুল হক জানান, দীর্ঘ তিন দশক ধরে ফার্মাসিস্ট ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা বিজ্ঞান বিভাগে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স করেও তাদেরকে ন্যায্য অধিকার ১০ম গ্রেড দেয়া হচ্ছে না। অথচ সমান ডিগ্রি নিয়েও অন্য অধিদফতরের ডিপ্লোমাধারীরা ১০ম গ্রেডের বেতন পাচ্ছেন। আমাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে আশ্বাস দিয়েও বাস্তবায়ন করেনি সরকার। তাই আমরা এ ধরনের চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা হলে আগামীকাল থেকে সারাদেশে কমপ্লিট শাট ডাউন দেয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মো: জুনায়েদুল কাদের, সাদ্দাম হোসেন, খাদিজা আক্তার বিজলী, লুৎফুন্নাহার, সোহেল রানা, সুবীর বনিক, জাহিদ হাসান প্রমুখ।
এদিকে হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টারে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। ফার্মেসির সামনে অনেক লোকজন অপেক্ষা করছে। এক্স-রে, প্যাথলজিসহ সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে এবং সেখানে অনেক মানুষ অপেক্ষা করেছে।
এ সময় হামিদা খাতুন, মদিনা খাতুন ও জাহাঙ্গীর আলম নামে বেশ কয়েকজন রোগী জানান, তারা সকাল ৯টা থেকে টিকেট নিয়ে ওষুধের জন্য এখানে অপেক্ষা করছেন। দুপুর ১২টা বাজলেও কেউ কাউন্টারে বসছে না। কখন বসবে কেউ বলতে পারছে না।
তারা আক্ষেপ করে বলেন, কর্মবিরতির কারণে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ছফির উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ জানান, সকাল থেকে রক্ত পরীক্ষা ও এক্স-রে’র জন্য দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু কোনো ফলাফল পাচ্ছি না। আজকে টেস্টগুলো করাতে পারব কিনা জানি না। বাইরে ক্লিনিকে টেস্ট করার মতো সামর্থ্য আমার নেই।
পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নুর-এ-আলম খান জানান, সারাদেশের মতো আমাদের পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা তাদের দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালন করছে। এতে করে হাসপাতালে রোগীদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি হচ্ছে। তাছাড়াও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গড়ে ৬০০-৭০০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। সরকার দ্রুত উদ্যোগ না নিলে সারাদেশের স্বাস্থ্য সেবা মুখথুবড়ে পড়বে।



