সবচেয়ে কম কোরবানি হয়েছে সিলেটে, বেশি রাজশাহী বিভাগে

রেকর্ড ৩৩ লাখের বেশি কোরবানির পশু অবিক্রীত

গত ৫ আগস্ট দীর্ঘদিনের আওয়ামী শাসকগোষ্ঠির পতন হয়েছে। শেখ হাসিনার পাশাপাশি দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। লুটপাটকারী নেতাদের বেশিরভাগই দেশছাড়া। আবার অনেকে দেশে থাকলেও প্রকাশ্যে আসছেন না। বর্তমান রাজনৈতিক বিবেচনায় এবার কোরবানি কম হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

Location :

Dhaka
রেকর্ড ৩৩ লাখের বেশি কোরবানির পশু অবিক্রীত
রেকর্ড ৩৩ লাখের বেশি কোরবানির পশু অবিক্রীত |নয়া দিগন্ত

চলতি বছর ৯১ লাখের কিছু বেশি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যার বেশিরভাগই গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া। অবিক্রীত থেকে গেছে ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি গবাদিপশু। গত বছর কোরবানি হয়েছিল এক কোটি ছয় লাখ ২১ হাজার ২২৮ গবাদিপশু। অবিক্রীত থাকে ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৩৯টি পশু। স্বাধীনতার পর এবারই সর্বাধিক গবাদিপশু অবিক্রীত থেকে গেল।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, এবার কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু মজুদ ছিল এক কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি। আর চাহিদা নির্ধারণ করা হয় এক কোটি তিন লাখ ৭৯ হাজার ২০২টি। অর্থাৎ চাহিদার চেয়েও আরো প্রায় ১৩ লাখ গবাদিপশু কোরবানি কম হয়েছে।

রেকর্ড সংখ্যক কোরবানির পশু অবিক্রীত থেকে যাওয়ার কারণ হিসেবে অধিদফতর দাবি করছে, এবার কোরবানির পশুর উৎপাদন বেশি ছিল। তাই পশু অবিক্রীত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া অবিক্রীত এই পশু সামনে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে দরকার পড়বে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট দীর্ঘদিনের আওয়ামী শাসকগোষ্ঠির পতন হয়েছে। শেখ হাসিনার পাশাপাশি দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। লুটপাটকারী নেতাদের বেশিরভাগই দেশছাড়া। আবার অনেকে দেশে থাকলেও প্রকাশ্যে আসছেন না। বর্তমান রাজনৈতিক বিবেচনায় এবার কোরবানি কম হয়েছে।

গত ৭ জুন বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসেব মতে, ২০২৫ সালে দেশে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে। যার মধ্যে গরু-মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি; ছাগল-ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮ টি এবং অন্যান্য ৯৬০ টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর মূলত পশু কোরবানির হিসেব করে থাকে। অধিদফতর বলছে স্ট্র্যাটিফায়েড র‌্যান্ডম স্যাম্পলিংয়ের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এবারের হিসেব করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার তিনটি গ্রাম (ছোট, মাঝারি এবং বড়) থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে হিসেবটি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এবার সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে। এই সংখ্যা তিন লাখ ১৯ হাজার ৮২৩ টি। এরপর কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এই সংখ্যা তিন লাখ ৮৩ গাজার ১৬২টি। আর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এই সংখ্যা ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১ টি গবাদি পশু। এর পর বেশি কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই সংখ্যা ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি গবাদিপশু। খুলনা বিভাগে কোরবানি হয়েছে আট লাখ চার হাজার ২২৪টি গবাদিপশু। বরিশাল বিভাগে কোরবানি হয়েছে চার লাখ ৭৮৩টি গবাদিপশু। রংপুর বিভাগে কোরবানি হয়েছে নয় লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি গবাদিপশু।