কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রায় ৯ বছর পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতর বিচারক মোহাম্মদ নুরুল আমিন বিপ্লব এ রায় দেন।
এদিকে রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। জামিনে বের হয়ে তিনজনই পলাতক রয়েছেন। এ মামলার আরেক আসামি মেয়ের মা নাজমুন্নাহারকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মো: জালাল উদ্দিন নয়া দিগন্তকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া জহিরকোনা গ্রামের মরহুম আবদুল মোতালিবের ছেলে মো: আনোয়ারুল ইসলাম, তার ভাই খুরশিদ মিয়া ও আরেক ভাই মেনু মিয়ার ছেলে সাদেক মিয়া।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট সকালে মো: আনোয়ারুল ইসলামের ১২ বছর বয়সী মেয়ে মীরা আক্তার আছমার ক্ষত-বিক্ষত লাশ বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ের নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে বাড়ির লোকজনের খবরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের বাবা আনোয়ারুল ইসলাম প্রতিবেশী ১৬ জনের নামে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে করিমগঞ্জ থানার এসআই মীর মোহাম্মদ মোখছেদুল আলমের ওপর।
দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে বলা হয়, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে বাবা আনোয়ারুল ইসলাম নিজে, মেয়ের মা ও বাদির ভাই খুরশিদ মিয়া ও ভাতিজা সাদেক মিয়া মিলে মীরা আক্তার আছমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাঁশঝাড়ের ভেতরে ফেলে রাখে।
তবে সাক্ষ্য প্রমাণ ও স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডের সাথে আনোয়ারুল ইসলাম, খুরশিদ মিয়া ও সাদেক মিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দণ্ড দেয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত না থাকায় মেয়ের মা নাজমুন্নাহারকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।