‘সরকার ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাশিত মাত্রায় রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে ধারণ করতে পারেনি’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম এটি একটি ঐতিহাসিক ও গতিশীল দলিল হবে। কিন্তু এতে আন্দোলনের মূল চেতনা ও বিভিন্ন শ্রেণির অবদানের প্রতিফলন ঘটেনি, ফলে হতাশ হয়েছি।’
ঘোষণাপত্র নিয়ে মূল আপত্তিগুলো তুলে ধরে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি অনুপস্থিত। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৯ দফা থেকে এক দফায় রূপান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হলেও ঘোষণাপত্রে তার কোনো উল্লেখ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, ইংলিশ মিডিয়াম, সাংবাদিক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও প্রবাসীদের সক্রিয় ভূমিকা ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত।’
টিএসসিতে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে জামায়াত নেতাদের ছবি নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওগুলো জামায়াত নেতা হিসেবে নয়, বরং বিচারিক হত্যার শিকার ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আদালতের নামে হাসিনা সরকার যে নিপীড়ন চালিয়েছে, সেটাই আমরা দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখিয়েছি। যারা কথায় কথায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেন, তারাই সেখানে মব সন্ত্রাস চালিয়ে ছবিগুলো নামিয়ে দিয়েছেন। অথচ আমরা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি। পরে প্রামাণ্য তথ্য ও ডকুমেন্টের মাধ্যমে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ৯ দফা, যা পরবর্তীতে এক দফায় পরিণত হয়। কিন্তু ঘোষণাপত্রে ৯ দফার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া, আন্দোলনের নীতি নির্ধারণে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সাংবাদিক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও প্রবাসীদের ভূমিকার কথাও বিস্তৃতভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তাই আমরা কিছুটা আশাহত হয়েছি এবং সরকার যেন এটি পুনর্বিবেচনা করে, সেই দাবি জানাচ্ছি।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাফেজ মো: ইসমাইলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সিফাতুল আলম ও মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি অমিত হাসানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।