কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এবং উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার (২ জুন) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে এই মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছমি উদ্দিন জানান, মামলাটি ২০২৫ সালের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২৫ ধারায় দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— মেহেদী হাসান পলাশ, খাঁন মঈন উদ্দিন, ফাহিম হাসান সাদিক, সুলতান আহামদ ও ইমান হোসাইন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তিরা সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। দাবি অনুযায়ী অর্থ না পেয়ে তারা পরিকল্পিতভাবে শাহজাহান চৌধুরীর সম্মানহানি করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ ছড়ান।
গত ৪ জুন ‘ডিজিটাল অগ্রযাত্রা’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেইজে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট নেতাদের পুনর্বাসন করে শত কোটি টাকা আয় করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য— এমন শিরোনামে একটি ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতে সুলতান আহামদ ও ইমান হোসাইন নামের দুজনের মিথ্যা সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হয় বলে দাবি করেছেন বাদিপক্ষ।
অ্যাডভোকেট ছমি উদ্দিন বলেন, সংবাদে যাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের কথা বলা হয়েছে, তাদের সাথে আমার মক্কেলের কোনো ধরনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। এটি পরিকল্পিতভাবে কক্সবাজার জেলা বিএনপি এবং সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপপ্রয়াস।
তিনি আরো বলেন, আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি প্রাথমিকভাবে আমলে নিয়েছেন এবং এখন পিবিআই মাঠপর্যায়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য, ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণ এবং প্রমাণ যাচাই করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ এবং দীর্ঘদিন উখিয়া-টেকনাফ আসনে সাংগঠনিক নেতৃত্বদানকারী শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচারের অভিযোগকে জেলা রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক চরিত্র হননের প্রবণতা নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অপপ্রচার এখন ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডিজিটাল অপরাধ দমন ও তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে আরো কঠোর ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।