গাজীপুরের শ্রীপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক পুলিশ সদস্য রাম দা দিয়ে কুপিয়ে এক কৃষকের হাতের কব্জি আলাদা করে দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন করা কব্জি নিয়ে থানায় হাজির হন ভুক্তভোগী কৃষক।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাতীসুতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত অমৃত বিশ্বাস (৪০) উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাতীসুতা গ্রামের রাম দুলাল বিশ্বাসের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক হযরত আলী (৬০) উপজেলার বরমী ইউনিয়নের তাতীসুতা গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি অফিস ফাঁকি দিয়ে বাড়িতে এসে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নাগরপুর থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী কৃষক হযরত আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমার বসতবাড়ির পাশে অভিযুক্তরা বন বিভাগের জমিতে থাকা সৃজিত গাছের চারা কেটে জমি জবরদখল করতে চেষ্টা করে। এসময় তাদের অবৈধ কাজের বাধা দেন আমার স্বামী। এসময় অভিযুক্ত আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে অভিযুক্তের হাতে থাকা ধারালো রাম দা দিয়ে সজোরে কোপ দেয়। আমার স্বামী হাত দিয়ে আত্মরক্ষায় চেষ্টা করলে বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় তারা দৌঁড়ে চলে যায়। এরপর আমরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
তাতীসুতা গ্রামের বাসিন্দা মো: সোহাগ মিয়া বলেন, ‘অভিযুক্ত পুলিশের দাপট দেখিয়ে প্রতিনিয়ত অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তার অত্যাচারে গ্রামের অনেক মানুষ অতিষ্ঠ। আমরা তার কঠিন বিচার দাবি করছি।’
শ্রীপুর সদর বিটের বিট কর্মকর্তা মো: আলাল খান বলেন, ‘জায়গা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগের জমি। বনের জমি নিয়ে তাদের বিরোধের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’
টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘কনস্টেবল অমৃত বিশ্বাসকে গতকাল জরুরি ডাক ডিউটিতে রেঞ্জ অফিসে পাঠানো হয়। সে তো কোনো ধরনের ছুটি নেয়নি তবে কি করে বাড়িতে গেলো। এবিষয়ে আমাদেরকে অবহিত করেনি। বিষয়টি ইতিমধ্যে আমরা অবহিত হয়েছি।’
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: শামীম আকতার বলেন, ‘আজ সকালে কব্জি বিচ্ছিন্ন কৃষক থানায় চলে আসে। এর পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে যায়। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা পালিয়েছে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’