সিলেটে কোনোভাবেই যেন থামছে না পাথর লুট কর্মকাণ্ড। এবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে উপজেলার বহুল আলোচিত শাহ আরেফিন টিলায় আবারো চোরাইপাথর উদ্ধার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে এক যুবককে আটক করা হয়েছে এবং পাথর পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি হাইড্রোলিক ট্রলি জব্দ করা হয়েছে। পরে ওই যুবককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৬ মাসের সাজা দেয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত শাহ আরেফিন টিলায় টাস্কফোর্সের অভিযানে আমান নামে একজনকে পাথরবোঝাই গাড়িসহ আটক করা হয়।
আটক আমান উপজেলার চিকাডহর গ্রামের জৈন উদ্দিনের ছেলে বলে জানা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রবিন মিয়ার নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ, ওসি (তদন্ত) সুজন চন্দ্র কর্মকার, পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিয়াদ আলী, উপজেলা প্রশাসনের সিএ মিজানুল কবিরসহ পুলিশ ফোর্স।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ সপ্তাহ থেকে শাহ আরেফিন টিলা ও শাহ আরেফিন (র.)-এর মাজার খুঁড়ে জালিয়ারপাড় গ্রামের বাবুল মিয়ার নেতৃত্বে আবারো পাথর উত্তোলন শুরু হয়েছে। সাদাপাথর লুটপাটের বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ায় শাহ আরেফিন টিলা থেকেও বন্ধ ছিল পাথর উত্তোলন। প্রায় দুই মাস পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকার পর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল মিয়ার নেতৃত্বে আবারো সক্রিয় হয়েছেন পাথর উত্তোলনকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন শাহ আরেফিন টিলা থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার পাথর লুটপাট করেছে বাবুল মিয়ার নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট। তারা এ পাথর শাহ আরেফিন টিলা থেকে ট্রাক্টর দিয়ে ভোলাগঞ্জ ও পাড়ুয়ার বিভিন্ন ক্রাশার মিলে বিক্রি করেন। সেগুলো শ্যালমেশিনচালিত ক্রাশার মিলে ক্রাশিং করে বিক্রি করা হয়।
এদিকে শাহ আরেফিন টিলার ও শাহ আরেফিনের (র.) মাজার ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর রাতে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে বশর মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক বছরের জেল দেয়া হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, ‘অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাথর উত্তোলন বন্ধ না করলে যারাই এর সাথে জড়িত থাকবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
স্থানীয় জনসাধারণের দাবি, প্রশাসনিক অভিযান একদিনের জন্য নয় নিয়মিতভাবে পরিচালিত হলে তবেই থামবে এ অবৈধ পাথর লুট। শাহ আরেফিন টিলায় নিয়মিত টহল ও কঠোর নজরদারি চালাতে হবে; নইলে প্রকৃতি ও ঐতিহ্য—দু’টিই হারিয়ে যাবে।



